সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে চাঞ্চল্যকর শিশু ইমন (৬) হত্যা মামলায় পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আসামিদের মধ্যে গোলাম ও আলহাজ্বকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ এরফান উল্লাহ তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ প্রদান করেন।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের এপিপি ওয়াছ করনী লকেট ও এপিপি মশিউর রহমান চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন বেলকুচি উপজেলার চর মকিমপুর গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে সোহেল (২৫), আব্দুস সোবহানের ছেলে কাওছার (২৪), গোলাম হোসেনের ছেলে ওসমান (২৫), তামাই গ্রামের ময়দান আলীর ছেলে আল-আমিন (৩৫) ও হিরণ (৩০)। আসামিদের মধ্যে হিরন পলাতক রয়েছেন।
মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, শিশু ইমনের বাবা চাঁন মিয়া মালয়েশিয়ায় থাকেন। চাঁন মিয়ার স্ত্রী মমতা খাতুন দুই সন্তান নিয়ে তাঁর বাবার বাড়ি চর মকিমপুর গ্রামে বসবাস করেন। মমতা খাতুন তাঁর চাচা আলহাজ্ব আলীর কাছ থেকে জমি কেনার জন্য ৩০ হাজার টাকা বায়না দেন। পরে জমি রেজিস্ট্রি করে না দেওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে চাচা আলহাজ্ব আলী টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন।
এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ হয়। টাকা চাওয়ায় আলহাজ্ব আলী ও তাঁর লোকজন মমতা খাতুনের ছেলের ক্ষতি করবেন বলে হুমকি দেন। একপর্যায়ে ২০১১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল থেকে মমতা খাতুনের শিশুসন্তান ইমন নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় বেলকুচি থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর শিশু ইমনের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বাড়ির পার্শ্ববর্তী হাফেজ হাজির একটি পরিত্যক্ত প্রস্রাবখানার ভেতরে ইমনের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা।
এ ঘটনায় নিহত শিশু ইমনের চাচা সানোয়ার হোসেন বাদী হয়ে আট জনের নাম উল্লেখ করে বেলকুচি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা চলাকালে ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ এই মামলার রায় প্রদান করেন।