দিনাজপুরের ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি কিশোর নিহতের ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সীমান্তের ৩১৪ /সিএস পিলারের কাছে মিনারুল ইসলাম (১৬) নামের এক কিশোরের মরদেহ পাওয়া যায়।
গতকাল বুধবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে দিনাজপুর সদরের দাইনুর সীমান্তে এই ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোর মিনারুল ইসলাম মিনার সদরের খানপুর ভিতরপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে ও খানপুর হাইস্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মাজেদুর রহমান স্থানীয়দের বরাত দিয়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্থানীয়রা বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে গুলির শব্দ শুনতে পায়। সীমান্ত এলাকায় স্থানীয়দের আত্মীয়-স্বজনকে ফোন করলে জানতে পারে সীমান্তে গুলির ঘটনা ঘটেছে। কয়েকজন যুবকসহ দাইনুর সীমান্ত কাঁটাতার বেড়ার নিকটবর্তী গেলে বিএসএফ তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে।
মাজেদুর রহমান আরও বলেন, আজ সকালে সীমান্তের ৩১৪ /সিএস পিলারের কাছে মিনারুল ইসলামের মরদেহ পাওয়া যায়। বর্তমানে তার মরদেহ বিএসএফ এর হেফাজতে রয়েছে। মরদেহ উদ্ধারের জন্য বিএসএফের সঙ্গে স্থানীয় বিজিবি যোগাযোগ করছে। আইনি পদক্ষেপ শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে বলে বিজিবি জানিয়েছে।
নিহত মিনারুল ইসলামের সঙ্গে একই ইউনিয়নের খানপুর খুদিহাইর এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে এমদাদুল (২৮) ও সালমান শাহের ছেলে সাগর (২০) ছিল। বর্তমানে তাঁরা দুজন পলাতক রয়েছে বলে জানান ইউপি সদস্য মাজেদুর রহমান।
নিহতের মা মিনারা পারভিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলে পড়াশোনার পাশাপাশি রংমিস্ত্রি কাজ করত। গতকাল বিকেলে বাসায় এসে খাওয়া-দাওয়া শেষে তারা ফোনে একটা কল আসলে সে রং করার কাপড় পড়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। তাকে জিজ্ঞাসা করলে বলে, রঙের কাজ আছে আসতে রাত ৮ /৯টা বাজবে। রাত ৯টার পরে তাকে ফোন দেওয়া হলে তার ফোন বন্ধ পাই। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও রাতে আর কোনো খোঁজ-খবর পাইনি। আজ সকালে মারা যাওয়ার খবর পাই।’
এদিকে মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়ে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম বলেন, ‘বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আলোচনা শেষে আমাদের জানালে আমরা গিয়ে মরদেহ গ্রহণ করব।’
দাইনুর বিজিবি বিওপির নায়েক সুবেদার আকতার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ বিষয়ে বিএসএফের কাছে আমরা চিঠি পাঠিয়েছি। মরদেহ ভারতের গঙ্গারামপুর থানায় নেওয়া হচ্ছে। সেখানে ময়নাতদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিজিবির মাধ্যমে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।’