গ্যাস আউটলেট ও অক্সিজেন সঞ্চালনে ত্রুটির কারণে গত ১১ মার্চ বন্ধ রাখা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রমেক) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। এরপর ১৭ দিন পাড় হলেও ত্রুটি সারানো সম্ভব হয়নি। ফলে জরুরি অক্সিজেন সেবা প্রত্যাশীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ১১ মার্চ রাতে আকস্মিকভাবে আইসিইউয়ের অক্সিজেন লিকেজ থেকে একটি ফ্যানে আগুন ধরে। পরক্ষণে সেখান থেকে মুমূর্ষু রোগীদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর থেকে বন্ধ হয়ে যায় আইসিইউ সেবা কার্যক্রম। তবে কার্ডিয়াক রোগীদের নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) সেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে।
এদিকে আইসিইউ সেবা বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ রোগীরা। আইসিইউয়ের অভাবে ভর্তি করানো সম্ভব হচ্ছে না জরুরি রোগীদের। বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালে। গত কয়েক দিনে লাইফ সাপোর্টের অভাবে বেশ কয়েকজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আসাদুল ইসলাম নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘আমার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসক লাইফ সাপোর্টের পরামর্শ দেয়। কিন্তু রংপুর মেডিকেলের আইসিইউ বন্ধ থাকায় বেসরকারি একটি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করাই। যা আমাদের মতো গরিব মানুষের জন্য অনেক ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে।’
জনস্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের চেয়ারম্যান বেলাল আহমেদ বলেন, ‘অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতালগুলোর আইসিইউতে এত সমস্যা দেখা যায় না তো। রংপুর মেডিকেলের কোনো চক্র পরিকল্পিতভাবে আইসিইউ বিভাগ বন্ধ রাখার চেষ্টা করছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন।’
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রংপুর মহানগরের সভাপতি খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, ‘এটা লজ্জাজনক। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রংপুর বিভাগের লাখো রোগীর চিকিৎসা সেবার ভরসাস্থল। এই হাসপাতালের যদি এ অবস্থা হয় তাহলে মানুষ যাবে কোথায়?’
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক রেজাউল করিমকে ফোন দিলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি আইসিইউয়ের রেজিস্ট্রার ডা. জামাল উদ্দিন মিন্টুর সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
ডা. জামাল উদ্দিন মিন্টু জানান, গ্যাস আউটলেট ও অক্সিজেন সঞ্চালনে ত্রুটির কারণে আইসিইউ সেবা সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রয়েছে। পুনরায় এই সেবা চালু করতে কাজ চলছে। দু-এক দিনের মধ্যে আইসিইউ কার্যক্রম চালু হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।