পুরো কেন্দ্রে দিনভর ভোট দিলেন মাত্র ১৬ জন ভোটার। কেন্দ্রের ৭ নম্বর বুথে ৩২২ জনের কেউ ভোট দেননি। ফলে শূন্য ভোটের রেকর্ড করল লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ি শহীদ আবুল কাশেম উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই বুথটি।
তৃতীয় ধাপে উপজেলা নির্বাচনে আজ বুধবার লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ হয়। সদর উপজেলার ১১৮টি ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল অনেক কম। পৌরসভা ও তার পার্শ্ববর্তী কিছু কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা থাকলেও অধিকাংশ কেন্দ্রে তেমন ভোটার ছিল না। বিশেষ করে বড়বাড়ি ইউনিয়নের কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতির হার সব থেকে কম। সেখানে বেশির ভাগ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি এক থেকে ১৫০ জনের মধ্যে।
বড়বাড়ি শহীদ আবুল কাশেম উচ্চ বিদ্যালয়ে একটিতে পুরুষ ভোটার, অপরটিতে মহিলা ভোটার। মহিলা ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৭৫২ জন। এর মধ্যে ভোট পড়েছে মাত্র ১৬টি। এ কেন্দ্রের ৭ নম্বর বুথে ৩২২ ভোটের মধ্যে কেউ ভোট প্রদান করেননি। এ বুথে শূন্য ভোটের রেকর্ড তৈরি করেছে। একই কেন্দ্রের এক নম্বর বুথে ৩৯৩ ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ২টি। দুই নম্বর বুথে ১ ভোট, তিন নম্বর বুথে ১ ভোট, চার নম্বর বুথে ৩ ভোট, পাঁচ নম্বর বুথে ২ ভোট, ছয় নম্বর বুথে ৫ ভোট, সাত নম্বর বুথে শূন্য ও আট নম্বর বুথে ভোট পড়েছে মাত্র ১টি। মোট আটটি বুথে ২ হাজার ৭৫২ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন মাত্র ১৬ জন।
শূন্য ভোটের বুথের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার শাহ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ব্যালট বহি যেভাবে নিয়ে এসেছি, সেভাবেই জমা দিতে হলো। কোনো ভোটার আসেনি বুথে। একটি ব্যালটও ভোটারের হাতে তুলে দিতে পারিনি। অলস সময় কাটালাম দিনভর।’
বড়বাড়ি শহীদ আবুল কাশেম উচ্চ বিদ্যালয়ের মহিলা ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী চঞ্চল কুমার শর্মা বলেন, সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মাত্র ১৬ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন। ভোট গ্রহণ করতে এ কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ দায়িত্বে রয়েছেন ৩৯ জন কর্মকর্তা–কর্মচারী।’
বড়বাড়ি শহীদ কাশেম উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরুষ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্বে থাকা লালমনিরহাট সরকারি কলেজের শিক্ষক ইমরান আলী মির্জা বলেন, ‘এ কেন্দ্রের ৭টি বুথে মোট ২ হাজার ৭৮৬ জন ভোটারের মধ্যে ৯০ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন। নষ্ট ভোট ১৪টি এবং ৭৬টি ভোট বৈধ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলায় বিএনপির প্রভাব কিছুটা বেশি থাকায় উপজেলা নির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহ কম। বিএনপি এ নির্বাচন বর্জন ঘোষণা করায় বিএনপির কর্মী সমর্থকেরা ভোটকেন্দ্রে যায়নি। বড়বাড়ি ইউনিয়নটি পুরো বিএনপি অধ্যুষিত হওয়ায় এ ইউনিয়নের কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি কম।
কেন্দ্রটির গেটের চা বিক্রেতা দুলু মিয়া বলেন, ‘প্রধান দুই দলের প্রার্থী না থাকায় ভোট জমেনি। বিএনপি-আওয়ামী লীগ দুই দলের প্রার্থী থাকলে জমে উঠত ভোট। এখন ভোট দিলেও যারা, না দিলেও তারাই নির্বাচিত হবেন। তাই ভোট দিয়ে লাভ কি।’
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা লুৎফুল কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।’