রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপি নেতা লাভলু মিয়াকে (৫০) নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার বৈরামপুর গ্রামের আব্দুল মতিন ও পৌর শহরের ১২ নম্বর রেলওয়ে এলাকার রেজাউল হক। এ নিয়ে লাভলু হত্যাকাণ্ডে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। তবে হত্যাকাণ্ডের ১৪ দিনেও মূল আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন দলীয় নেতা–কর্মী ও নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা।
এদিকে স্থানীয় দলীয় নেতা–কর্মী ও নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা মূল হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে ১২ এপ্রিল উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের পাকার মাথা এলাকায় মানববন্ধন করেন। পরদিন ১৩ এপ্রিল পৌর শহর এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও ১৪ এপ্রিল থেকে গতকাল পর্যন্ত টানা বিক্ষোভ মিছিল করেন তাঁরা।
লাভলু মিয়ার স্ত্রী রায়হানা বলেন, ‘আমার স্বামী বিএনপির রাজনীতি করে জীবন পর্যন্ত দিলেন। কিন্তু এখন শুনছি, তিনি নাকি বিএনপিই করেননি। আমার প্রশ্ন, আমার স্বামী যদি বিএনপি না করেই থাকেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এত মামলা হয়েছিল কীভাবে? তাঁকে কেনইবা ছাত্র আন্দোলনের সময়ে জেল খাটতে হয়েছিল। এই নোংরা রাজনীতি বন্ধ করে আমার স্বামীকে ওই মামলার এজাহারে বিএনপির স্বীকৃতি দিতে হবে। এতে তাঁর আত্মা কিছুটা শান্তি পাবে।’
লাভলু মিয়ার ছেলে রায়হান মিয়া বলেন, ‘আমার বাবা বিএনপির রাজনীতি করতে গিয়ে বাড়ির অনেক টাকা–পয়সা নষ্ট করেছেন। জীবনও দিলেন রাজনীতির পেছনে। এখন আমার সেই বাবাকে জনৈক ব্যক্তি বলা হচ্ছে। এটা সন্তান হিসেবে মেনে নিতে পারছি না।’
এ বিষয়ে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ ঘটনায় এক এজাহারভুক্ত আসামিসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, ৫ এপ্রিল দুপুরে বদরগঞ্জ পৌর শহরের একটি দোকানভাড়া নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এ সময় লাভলু মিয়াকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপানো হয়। পরে তিনি হাসপাতালে মারা যান।