‘গত বছর শেখ হাসিনা আপা হামার রংপুরত আসায় হামার তিস্তাপারের মানুষগুলার মনত খুব আশা ছিল। এবারের বাজেটে মনে হয় হামার তিস্তার নদী বান্দি দেবে হামার হাসিনা আপা। কিন্তু সবারগুলা মুখে মুখে শুনবার নাগছি, এবার নাকি হামার রংপুরের জন্য কোনো বাজেটই নাই।’
আজ শনিবার সকালে তিস্তা চরে বাদাম তোলার সময় উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের ৫০ বছর বয়সী বকুল মিয়া প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে এভাবেই ক্ষোভ আর হতাশা ঝাড়েন। এ সময় তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রংপুরত শেখ হাসিনা আসি হামরা গঙ্গাচড়ার প্রায় সবগুলা গেছনো শেখ হাসিনার কথা শুনবার জন্য। তা যায়া হামার লাভ কী হইছে বাহে? এবার বাজেটের কথা শুনি হামারগুলার মন ভাঙি গেইছে। হামার রংপুরের নেতাগর সারা দিন খালি যে শেখ হাসিনা শেখ হাসিনা কয়া চিল্লায়, তা চিল্লি লাভ কী? সৌগে বেলে ভাটি অঞ্চলের জন্য বরাদ্দ দেছে হাসিনা, হামার জন্য বলে কিছুই নাই।’
সরেজমিনে তিস্তাপাড়ের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার তাঁদের বড় আশা ছিল সরকার তিস্তা নদী শাসন করার ব্যবস্থা করবে। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে উত্তরাঞ্চলের তিস্তা নদীসহ কোনো খাতে বরাদ্দ না থাকায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তিস্তাপারের মানুষের কপালে। তারা বলছে, ‘শেখ হাসিনা ভোটের আগে রংপুরত এসে আমাদের অনেক কথা বলে গেছেন। কিন্তু কোনো কথাই রাখলেন না। এই বাজেটই হামাদের মনে করিয়ে দেয়, আমাদের রংপুরের মানুষকে কতটা ভালোবাসেন তিনি।’
তিস্তার চর থেকে নৌকায় করে গরুর জন্য ঘাস নিয়ে ফেরার সময় কথা হয় কোলকোন্দ ইউনিয়নের চরাঞ্চলের বাসিন্দা রফিকুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘হামরা তো সরকারের কাছে কিছু চাই না। হামরা শুধু চাই তিস্তা নদীটা একনা শাসন। হামরা তিস্তাপারের মানুষ, কারও দয়া নিয়া বাঁচিবার চাই না। হামরা কাম করি খাওয়া শিখছি। শুধু হামারগুলার একটাই দুঃখ, এই তিস্তার ভাঙন।’