অতিরিক্ত জেলা জজের পা ধরতে দুই ছাত্রীর মাকে ‘বাধ্য করার’ ঘটনায় বিচারক প্রত্যাহার হলেও বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বহাল আছেন। এতে ক্ষুব্ধ ছাত্রী ও অভিভাবকেরা আজ সোমবার দুপুরে বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভের চেষ্টা করেন।
বিচারকের মেয়ে ও বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু না দেওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মন্তব্যের জেরে অভিভাবকদের পা ধরতে বাধ্য করা এবং ডিজিটাল আইনে মামলার হুমকির ঘটনায় প্রতিবাদের মুখে ২৩ মার্চ বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিনকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা ক্ষুব্ধ। তাই তাঁরা আজ সোমবার বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভের উদ্যোগ নেন। খবর পেয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াসমিন গিয়ে তাঁদের শান্ত করেন। পরে ছাত্রী ও অভিভাবকেরা চলে যান।
রুহুল আমিন নামের একজন অভিভাবক বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন ২০০৭ সালে এই প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। গত ১৬ বছর ধরে তাঁর বদলি হয় না। ফলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন প্রধান শিক্ষক। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগেও ভর্তি বাণিজ্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তিনি সব কিছু ম্যানেজ করে পার পেয়ে যান। এবার যেন পার পেতে না পারেন একারনেই অভিভাবকেরা বিক্ষোভ সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।’
যোগাযোগ করা হলে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘যেহেতু জেলা প্রশাসন থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কাজও শুরু হয়েছে। একারণে তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে চাই না।’
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার দিনই অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা ও আইসিটি) প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তাদের তদন্ত কাজ শুরুও করেছে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তারা তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেবে। এই সময় পর্যন্ত আমি সকলকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানাই। যেহেতু প্রধান শিক্ষক ও শ্রেণি শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক অভিযোগ করেছেন। এ কারণে তা খতিয়ে দেখতে কিছুটা সময় প্রয়োজন। তদন্ত কাজ সম্পন্ন করতে সকলের সহযোগিতার দরকার। আমরা আশা করি তদন্ত পর্যন্ত সকলে সহযোগিতা করবেন।’