রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ভারী বৃষ্টির পানিতে ভেসে যাওয়া পুকুরের মাছ আটকাতে গিয়ে নিখোঁজ জেলের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। মাছ ধরার জালে গতকাল শুক্রবার রাতে মরদেহটি আটকা পড়ে।
আজ শনিবার সকালে গিয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছে। বৃহস্পতিবার পানির স্রোতে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন তিনি। নিহত জেলের নাম মোকসেদ আলীর (৫৫)। তিনি দুর্গাপুর উপজেলার ঝালুকা গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ বলছে, গত বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সারা দিনের বৃষ্টিতে গোদাগাড়ীর বিল পাতিকোলা ও কমলাপুর বিলের শত শত পুকুর ভেসে যেতে শুরু করে। কমলাপুর বিলে এক মালিকের পুকুর রক্ষার জন্য বৃহস্পতিবার ২৫ জন শ্রমিক দুর্গাপুর থেকে কমলাপুর বিলে গিয়েছিলেন। তাঁরা মালিকের অপেক্ষাকৃত নিচু পুকুরগুলো থেকে ওপরের পুকুরে মাছ তুলে আনার কাজ করছিলেন।
এ সময় উপজেলার চারটি ইউনিয়নের বৃষ্টির পানি প্রবল বেগে কমলাপুর বিলে নামতে থাকে। পুকুরের মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত ২৫ জন শ্রমিক ওই স্রোতে ভেসে যান। এ সময় স্থানীয়রা পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন। পরে পুলিশ এসে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় এই ২৫ জন শ্রমিকের মধ্যে ২৪ জনকে উদ্ধার করে। নিখোঁজ ছিলেন মোকসেদ আলী।
মোকসেদ আলীর নিকটাত্মীয় মজিবুর রহমান শুক্রবার দিবাগত রাতে জানিয়েছিলেন, কমলাপুর বিল থেকে পানির স্রোত বারণই নদীতে গিয়ে পড়েছে। পানির স্রোত যেদিকে গেছে, তারা সেই দিক দিয়ে মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাস নিয়ে খোঁজাখুঁজি করেও মোকসেদ আলীর সন্ধান পাননি।
স্থানীয়রা বলছে, কমলাপুর বিলে দুই থেকে আড়াই হাজার বিঘা জমিতে পুকুর ছিল। ভারী বর্ষণে সব পুকুর ভেসে গেছে। এই মাছ সারা বিলে ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সারা দিন বিভিন্ন এলাকার শত শত মানুষ এই বিলে মাছ ধরতে নামে। তারা জাল দিয়ে সারা বিল ঘিরে ফেলে। শুক্রবার রাতে মাছ ধরার জালে মোকসেদ আলীর লাশ আটকা পড়েছিল। দূরে যাতে ভেসে যেতে না পারে—এ কারণে লাশ আটকে রেখেছিল মাছ ধরতে যাওয়া লোকজন। সকালে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছে।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মোকসেদ আলীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের লোকজন এসেছেন। তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একটি অপমৃত্যুর মামলা করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ স্বজনদের দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।’