পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নওমালা ইউনিয়নের নিজ বটকাজল গ্রামে মোসা. জান্নাতুল (১৮) নামে এক গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে জোড়পূর্বক বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় লোকজন ওই গৃহবধূর স্বামী নজরুল ইসলামকে (২৬) আটক করে আজ মঙ্গলবার রাত পৌনে আটটার দিকে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, প্রায় ছয় মাস আগে নওমালা ইউনিয়নের নওমালা গ্রামের বাসিন্দা সহিদুল ইসলাম মুন্সির ছেলে নজরুল ইসলামের সঙ্গে একই ইউনিয়নের পাশের নিজ বটকাজল গ্রামের বাসিন্দা মো. সানু গাজীর মেয়ে জান্নাতের বিয়ে হয়। নজরুল ঢাকায় রড মিস্ত্রীর কাজ করেন। গত ২১ ফেব্রুয়ারি বাড়িতে আসেন। এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি স্ত্রী জান্নাতুলকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে যান।
জান্নাতুলের মা মোসা. তাসলিমা বেগম (৫৫) বলেন, ‘দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে তাঁর মুঠোফোন নিয়ে দেখছিল নজরুল। এ নিয়ে জান্নাতুল ও নজরুলের কথা-কাটাকাটি হয়। তখন তিনি বাইরে চলে যান। ঘরে অন্য কেউ ছিল না। পরে এসে জান্নাতুলকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান। অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে নওমালা ইউনিয়ন কমিউনিটি কেন্দ্রে নিয়ে গেলে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক জান্নাতুলকে মৃত ঘোষণা করেন।’
তাসলিমা বেগমের অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে জোড়পূর্বক বিষ খাইয়ে মেরে ফেলা হয়েছে।
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার শাশুড়ির মুঠোফোন ধরাকে কেন্দ্র করে জান্নাতুল আমার সঙ্গে অনেক খারাপ আচরণ করেছে। এ কারণে আমি আমার শ্বশুরের ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির অদূরে একটি দোকানে গিয়ে বসেছিলাম। পরে শুনতে পাই জান্নাতুল বিষ পান করে আত্মহত্যা করেছে। সেখান থেকে জান্নাতুলের স্বজনেরা আমাকে আটক করে মারধর করেছে। হাত-পা বেঁধে বিষ খাওয়ানোর অভিযোগ সত্য না।’
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে বিষ পানে মারা যাওয়ার আলামত পাওয়া গেছে। লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আগামীকাল বুধবার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। তবে আত্মহত্যা করেছে, না বিষ খাইয়ে মেরে ফেলা হয়েছে তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়ার আগে বলা যাবে না। মৃত্যুর সঠিক কারণ উদ্ঘাটনের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন জান্নাতুলের স্বামীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’