রাজশাহীর দুর্গাপুর
রাজশাহীর দুর্গাপুরে জেলা প্রশাসনঘোষিত সময়সীমা না মেনে কোনো কোনো ব্যবসায়ী অপরিপক্ব আম পাড়া শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। এসব আম বেশির ভাগই পাঠানো হচ্ছে ঢাকায়। কিছু কিছু বিক্রি করা হচ্ছে স্থানীয় বাজারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কৃত্রিম উপায়ে পাকিয়ে বাজারজাত করার উদ্দেশ্যে আমগুলো পাড়া হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, আমগুলো আচার বানানোর জন্য পাড়া হচ্ছে। এদিকে কৃষি অফিস বলছে, প্রশাসনঘোষিত ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডারের সময় না মেনে অপরিপক্ব আম পাড়লে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলার দুর্গাপুর উপজেলার বাগানে বাগানে আম পাড়া শুরু করেছেন অনেকেই। তবে বাগানে এখনো আম পাকা শুরু হয়নি। পাকার আগেই পাড়ার অনুমতি না পেলেও অনেক অসাধু ব্যবসায়ী গোপনে অপরিপক্ব আম বাজারজাত করছেন বলে বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযোগ আসছে।
গত ৭ মে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আলোচনায় নিরাপদ, বিষমুক্ত ও পরিপক্ব আম নিশ্চিত করতে এ বছরের ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ প্রকাশ করা হয়। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আগামী ১৫ মে থেকে আম পাড়া শুরু হওয়ার কথা।
তবে এক সপ্তাহ আগে থেকেই দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গুটিসহ বিভিন্ন জাতের আম পাড়তে দেখা গেছে। পৌর এলাকার দেবীপুর, মাড়িয়া, আমগ্রাম, রঘুনাথপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় আগাম আম পাড়ার খবর পাওয়া গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার আমগ্রাম এলাকায় আম পাড়ার খবর পাওয়া যায়। সেখানে পৌঁছানোর আগেই দেখা যায় ভ্যানে আম নিয়ে যাচ্ছেন এক ব্যক্তি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি বলেন, ‘এটা সুরমা ফজলি জাতের আম। এখনো পাকেনি। বাগান থেকে কিনে নিয়েছি। আচার তৈরির জন্য এই আম ঢাকায় পাঠানো হবে।’
রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের আড়ত পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর। গতকাল গিয়ে দেখা যায়, বাজারটিতে কেউ কেউ আম নিয়ে এলেও গোপনে কেনাবেচা হচ্ছে। এসব আম মোকামে না রেখে কোম্পানিতে অথবা ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আম পাড়া এখনো শুরু হয়নি। তাই বাজারে আম দেখা যাচ্ছে না। এখন দু-একজন আম নিয়ে এলেও তা বিভিন্ন কৌশলে কিনে আচার করার জন্য কোম্পানিতে বা ঢাকায় পাঠানো পাঠাচ্ছেন।’
গত সপ্তাহে উপজেলার ঝালুকা গ্রামে ফেসবুকে লাইভ করে আম পাড়ছিলেন সামিউল ইসলাম নামের এক ব্যাপারী। সে সময় তিনি বলেন, ‘গুটি আম পাড়ছি। এটি একটি আচার কোম্পানি নেবে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে ১৯ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমিতে আমবাগান আছে। হেক্টরপ্রতি সম্ভাব্য গড় উৎপাদন ১৩ দশমিক ২৬ টন। মোট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার ৬ টন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহারা শারমিন লাবনী বলেন, ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আম পাড়া শুরু হবে। এর আগে কোথাও অপরিপক্ব আম পাড়ার খবর পাওয়া গেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউএনও সাবরিনা শারমিন বলেন, অপরিপক্ব আম পাড়ার কোনো অভিযোগ এখনো আসেনি। জেলার সূচির বাইরে কোথাও অপরিপক্ব আম পাড়া হলে উপজেলা কৃষি বিভাগে অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।