ঘুষ লেনদেনের সময় পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দুই প্রকৌশলীকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কক্ষ থেকে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। পরে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ তাঁদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটে আজ মঙ্গলবার পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয়ে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের টিকশাইল গ্রামের মিনহাজুল ইসলামের ছেলে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মাসুদ রানা (২৯) এবং কুমিল্লার মেঘনা থানার শিবনগর এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে একই কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন (৪২)।
এ বিষয়ে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি জানতে পেরেছি। দুদক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি দেখছে। কোথাকার টাকা, কীভাবে লেনদেন হলো সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এই সময় ঠিকাদারের সঙ্গে সরকারি অফিসের বন্ধ কক্ষে কিসের লেনদেন হচ্ছে জানতে চান সাংবাদিকেরা। কিন্তু কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তাঁরা। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় পুলিশকে জানান সাংবাদিকেরা। পুলিশ পৌঁছানোর আগেই সেখান থেকে পালিয়ে যান দুই ঠিকাদার। পরে পুলিশ এসে দুই প্রকৌশলীকে আটক করে এবং দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) খবর দেয়। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের কাছ থেকে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন দুদক ও পুলিশ। সন্ধ্যার পর তাঁদের আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
আনিছুর রহমান মারুফ নামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক ঠিকাদার বলেন, ‘প্রত্যেক কাজে কর্মকর্তাদের বিশেষ কমিশন দিতে হয়। কাজের শুরু থেকে ধাপে ধাপে এসব টাকা দিতে হয়। না দেওয়া হলে কাজের বিল আটকে দেওয়া হয়। এসব কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা হওয়া উচিত। যাতে অন্য কেউ এমন কাজ করার সাহস না পায়।’
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পাবনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈকত ভাই আমাদের ফোন করে জানান যে সেখানে ঘুষের টাকা লেনদেন হচ্ছে। এমন খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকাসহ দুই উপবিভাগীয় প্রকৌশলীকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছি। এখন তাঁদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদে সত্যতা পেলে দুই প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে দুদক বিষয়টি অনুসন্ধান করবে।’