রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌরসভার নারী কাউন্সিলর জলিদা বেগম ৪৫ বছর বয়সে এসএসসি পাস করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এবার তিনি স্নাতক সম্পন্ন করতে চান।
দুর্গাপুর উপজেলার কয়ামাজমপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবার পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এ-গ্রেড পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন জলিদা বেগম। তিনি ৪ দশমিক ১৮ পয়েন্ট পেয়েছেন।
ছোটবেলায় অভাবের কারণে পড়াশোনা করতে পারেননি জলিদা। অল্প বয়সেই বিয়ে দেন বাবা-মা। কিন্তু এখন জনপ্রতিনিধি হয়ে উপলব্ধি করছেন যে, শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত থাকা মানে নিজেকে পিছিয়ে রাখা।
নারী কাউন্সিলর জলিদা বেগম বলেন, ‘এসএসসিতে যে ফল হয়েছে, তাতে আমি খুশি। তবে আমি এখানেই ক্ষান্ত হব না, এবার ডিগ্রি কমপ্লিট করতে চাই।’
জলিদা বলেন, ‘বাবা-মা অল্প বয়সে আমাকে বিয়ে দেন। জনপ্রতিনিধি হয়ে উপলব্ধি করছি যে, শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত থাকা মানে নিজেকে পিছিয়ে থাকা। প্রায়ই সালিস-দরবার করতে হয়। আমার স্বাক্ষর দেখে অনেকে মুখ টিপে হাসাহাসি করেন। তখন নিজের কাছে খারাপ লাগে। সেই থেকে এই বয়সেও পড়াশোনা করার আগ্রহ জাগে। ভবিষ্যতে ডিগ্রি পাস নারী হিসেবে সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।’
এই কাউন্সিলর বলেন, সালিস দরবারে গেলে স্বাক্ষর দেখে অনেকে মুখ টিপে হাসেন। এই পীড়া থেকেই তিনি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারেন। তাই ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন দুর্গাপুর উপজেলার কয়ামাজমপুর উচ্চবিদ্যালয়ে। সেখান থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ৪ দশমিক ১৮ পয়েন্ট পেয়ে তিনি এ-গ্রেড নিয়ে পাস করেছেন।
এ বিষয়ে কয়ামাজমপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব সাজ্জাদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, লেখাপড়ায় জলিদার প্রবল আগ্রহ। হয়তো সুযোগের অভাবে সঠিক সময়ে তিনি পড়াশোনা করতে পারেননি। কিন্তু এখন একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও ব্যস্ততার মধ্যে পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। ফলাফলও ভালো করেছেন। এ বয়সে তাঁর এমন ফলাফলে আমরা সবাই খুশি। অনেক নিয়মিত ছাত্রও তাঁর মতো পয়েন্ট তুলতে পারেনি।’