করোনা সংক্রমণ রোধে পূর্বঘোষিত লকডাউন গতকাল বুধবার শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সময়সীমা বাড়িয়ে ১০ তারিখ পর্যন্ত করায় বিপাকে পড়েছেন অনেক মানুষ। তড়িঘড়ি করে তাঁরা ফিরছেন রাজধানীতে।
বুধবার সকালে দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহী গাড়ি নদী পাড়ি দিতে ঘাটে আসছে। সেই সঙ্গে কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলও দেখা যায়।
এ ছাড়াও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মাহেন্দ্রতে করেও মানুষ ঘাটে এসে নামছেন। দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ থাকায় কাউকে কাউকে খোলা ট্রাকে আসতে দেখা গেছে।
সকাল ১০টার দিকে মানিকগঞ্জের দৌলতদিয়া ঘাট থেকে চন্দ্র মল্লিকা নামে একটি ছোট ফেরি দৌলতদিয়া ছয় নম্বর ঘাট থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। তাতে পণ্যবাহী কয়েকটি ট্রাক ও ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়াও দুই শতাধিক যাত্রী ছিল।
গোপালগঞ্জ থেকে নবীনগর যাচ্ছিলেন গার্মেন্টসকর্মী এ বি এম সাদেকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘নবীনগরে একটি গার্মেন্টসে কাজ করি। ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ এসেছিলাম। ঈদ শেষে লকডাউন শুরু হওয়ায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। প্রতিষ্ঠান চালু হওয়ায় অফিস থেকে বারবার ম্যাসেজ দিয়ে যেতে বলছে। কিন্তু টিভিতে ঘাটের অবস্থা দেখে বের হওয়ার সাহস পাইনি। অফিস থেকে বলা হয়েছে, আজকের (বুধবার) মধ্যে অফিসে যেতে। তাই চাকরি বাঁচাতে আজ বাধ্য হয়েই যাচ্ছি।’
কুষ্টিয়া থেকে কাঁচামাল লোড করে ঢাকা যাচ্ছিলেন ট্রাকচালক আজাদ খাঁ। তিনি বলেন, ‘আজ (বুধবার) সকালে কাঁচামাল নিয়ে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় যাচ্ছি। রাতে কারওয়ান বাজারে কাঁচা সবজি নামানোর পর ভোররাতেই আবার রওনা হব।’
এদিকে যশোর থেকে ব্যবসায়িক কাজে ঢাকায় যাচ্ছিলেন আসিফুর রহমান। এ জন্য তিনি খুব সকালে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রিজার্ভ করে রওনা হন। তাঁর সঙ্গে পথ থেকে ঢাকা যাবেন বলে আরও কয়েকজন ওঠেন। বেলা ১০টার দিকে পথে কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে পৌঁছান তাঁরা।
আলাপকালে আসিফুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাজ তো আর বন্ধ নেই। যত লকডাউন হোক আর কঠোর লকডাউন হোক। কাজ করতে না পারলে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে যাবে। তাই ব্যবসায়িক কাজে ঢাকা যেতে হচ্ছে।’