‘আমি এতিম হয়া গ্যালাম, আমারে কেউ আম্মু কয়া ডাক পারবি না। আর কোনো দিন আমার আব্বুকে দেকতে পারব না। আমার আব্বুকে আনে দাও।’ কাঁদতে কাঁদতে এভাবেই কথাগুলো বলছিল ইরাকে মালিকের হাতে খুন হওয়া মো. আজাদ খানের মেয়ে আবিনা আক্তার কথা (১২)।
নিহত আজাদ খান রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হোসেন মণ্ডলপাড়ার ইয়াজ উদ্দিনের ছেলে। আজাদের মৃত্যুর খবরে কাঁদছেন স্ত্রী, মা, সন্তানসহ স্বজনেরা। তাঁদের পাশে বসে প্রতিবেশী ও স্বজনেরা সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে আজাদের স্ত্রী শারমিন বেগম বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার রাতে আজাদের সঙ্গে কথা হয়। বলে, সেখানে সে ভালো নেই। পরের দিন তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারি নাই। আমার স্বামীকে যারা হত্যা করল, আমার সন্তানদের যারা এতিম করল, তাদের বিচার চাই আমি।’
পরিবারের বরাতে আজাদের বন্ধু শফিকুল ইসলাম জানান, তিন মাসে আগে আজাদ ইরাকে যান। সেখানে বাগদাদে কাজ করতেন। এক সপ্তাহ আগে কাজের জায়গা থেকে নিখোঁজ হন। এর মধ্যে তাঁর কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। গতকাল রাতে লিটন নামের এক ইরাকপ্রবাসী ফোন করে আজাদের পরিবারকে জানান, আজাদকে হত্যা করা হয়েছে। আজাদের মালিকের সঙ্গে বেতন নিয়ে ঝামেলা হয়। তাঁর মালিক তাঁকে হত্যা করে লাশ তিন টুকরা করে বস্তায় ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেন।
পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পরে আজাদের হত্যাকারী বাড়ির মালিক নিজেই থানায় আত্মসমর্পণ করে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে কী তথ্য আছে—জানতে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাহিদুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তারকে ফোন করেও পাওয়া যায়নি।