পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে ভেসে এসেছে একটি মৃত ইরাবতী ডলফিন। প্রায় ৬ ফুট দৈর্ঘ্য ডলফিনটির। এর পুরো শরীরের চামড়া ওঠানো। ডলফিনটি দেখার জন্য স্থানীয়সহ ঘুরতে আসা পর্যটকেরাও ভিড় জমান কুয়াকাটা সৈকতে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে কুয়াকাটা সৈকত থেকে ২ কিলোমিটার পূর্বদিকে ঝাউবন এলাকায় ডলফিনটি দেখতে পান স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা বলেন, সৈকতে প্রায় সময়ই মৃত ডলফিন ভেসে আসে। ডলফিনটি হয়তো এক সপ্তাহ আগে জালে আটকে মারা গেছে।
জলজ প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ডলফিন শুধু সমুদ্রের প্রাণী নয়, এটি সমুদ্র পরিবেশের স্বাস্থ্য ও ভারসাম্যের এক গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ডলফিনের উপস্থিতি সমুদ্রের ইকোসিস্টেমকে সুস্থ রাখে, মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যকে সুরক্ষা দেয় এবং স্থানীয় পর্যটন ও জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রেও অবদান রাখে।
সমুদ্রের নীল অর্থনীতি, উপকূলের পরিবেশ-প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ডফিশের ইকোফিশ-২ অ্যাক্টিভিটি বাংলাদেশ প্রকল্পের সহযোগী গবেষক বখতিয়ার উদ্দিন জানান, এটি মূলত ইরাবতী প্রজাতির ডলফিন। এটির গায়ে রক্তাক্ত দাগ। নৌযান, মাছ ধরার যন্ত্র ও জেলেদের কার্যক্রমই এদের মৃত্যুর মূল কারণ। নদী ও মোহনার দূষিত পানি যেমন—শিল্পবর্জ্য, প্লাস্টিক ও তেল হুমকি সৃষ্টি করছে। গবেষকেরা স্থানীয় সচেতনতা বাড়ানো এবং ডলফিন অভয়ারণ্য এলাকায় জাল ব্যবহারে সীমাবদ্ধতার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে কুয়াকাটার জলজ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকে।
বন বিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বন বিভাগের টিম পাঠিয়েছি। মৃত ডলফিনটিকে মাটিচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে দুর্গন্ধ ছড়াতে না পারে।’