পাবনার আরিফপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতা।
আজ শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় শহরের কাচারিপাড়া জামে মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে সদর উপজেলার আরিফপুর কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাঁর মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স পাবনা শহরের বাড়িতে এসে পৌঁছায়। এ সময় মা, বাবা ও আত্মীয়স্বজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। ওই সময় পুরো এলাকায় হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত জানুয়ারি মাসে পারিবারিকভাবে বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়েছিল জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতার। পরিবারের স্বপ্ন ছিল একমাত্র মেয়েকে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে শ্বশুরবাড়িতে পাঠানো। কিন্তু তা আর হলো না। মাত্র ৩০ বছর বয়সেই পরপারে পাড়ি জমালেন তিনি।
জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতা পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক রুমি খন্দকার এবং পাবনা কলেজের সাবেক সহকারী অধ্যাপক লুৎফুন্নাহার পলির একমাত্র সন্তান।
১৯৯৫ সালে জন্ম নেওয়া জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতা ছোট থেকেই মেধাবী ছিলেন। ২০০৯ সালে পাবনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং পাবনা মহিলা কলেজ থেকে ২০১১ সালে জিপিএ-৫ নিয়ে পাস করার পর ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানেই অনার্স ও মাস্টার্স শেষে ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন।
বাবা রুমি খন্দকার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার নির্বাচনের দায়িত্ব শেষে রাত ১২টার দিকে শিক্ষক কোয়ার্টারে তার বাসায় যায়। সকালে যখন তাকে নির্বাচনের ভোট গণনার কক্ষে ডাকা হয়, তখন সেখানে যায় সে। কিন্তু কক্ষে ঢোকার আগেই দরজার সামনেই সে পড়ে যায়। পরে তার মৃত্যু হয়। গতকাল ভোট গ্রহণের পর আমার সঙ্গে ওর কথা হয়। ও নির্বাচন নিয়ে বেশ খুশি ছিল।’
শুক্রবার সকাল ৮টা ১৮ মিনিটে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিয়েছিল, ‘বাবা আমি ভোট গণনা করতে যাচ্ছি।’