ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে পাবনার ঈশ্বরদী ইপিজেড কারখানার আরও এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম সুমিতা খাতুন (২২)। আজ মঙ্গলবার ঈশ্বরদী শহরের পিয়ারাখালীর বাড়িতে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছে।
সুমিতা খাতুন ঈশ্বরদী ইপিজেডের একটি কারখানার শ্রমিক ও পিয়ারাখালী এলাকার সাগর বিশ্বাসের স্ত্রী। এর আগে গত রোববার গভীর রাতে উপজেলা সাহাপুর ইউনিয়নের তিলকপুর গ্রামে সুমি খাতুন (২৫) নামের ঈশ্বরদী ইপিজেড কারখানার এক শ্রমিক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এ নিয়ে দুদিনে ডায়রিয়ায় ঈশ্বরদী ইপিজেডের দুই নারী শ্রমিকের মৃত্যু হলো।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুমিতা খাতুন গতকাল সোমবার ইপিজেড কারখানায় ডিউটি শেষ করে রাতেই বাসায় ফেরেন। ওই দিন দুপুরে তিনি ইপিজেড কারখানার খাবার পানি পান করেছিলেন। এরপর গতকাল রাত আনুমানিক ১২টার পর থেকে তাঁর পেটে সমস্যা দেখা দেয়। প্রথমে বমি করেন এবং পরে পাতলা পায়খানা শুরু হয় তাঁর। এই অবস্থায় রাতে বাড়িতে রেখে তাঁকে ডায়রিয়ার চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু আজ ভোরে আবারও পাতলা পায়খানা শুরু হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে না নিতেই সকাল সাড়ে ৯টার তিনি মারা যান।
ঈশ্বরদী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম বলেন, খবর পাওয়ার পরপরই মরদেহ উদ্ধার ও সুরতহাল করা হয়েছে। তবে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে আজ বেলা ২টা পর্যন্ত ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন আরও ২৯ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১৫ জন নারী এবং আটজন পুরুষ শ্রমিক। আউটডোরে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় ৫০ জন। একই সঙ্গে ঈশ্বরদী ইপিজেডের নিজস্ব মেডিকেল সেন্টারে গতকাল ৫২ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশই নারী শ্রমিক।
ঈশ্বরদী ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক এ বি এম শহিদুল ইসলাম জানান, গতকাল থেকে ঢাকার ছয় সদস্যের মেডিকেল টিম ইপিজেডে বিভিন্ন কারখানায় খাবার পানির উৎস পর্যবেক্ষণ, অনুসন্ধান, পানির নমুনা সংগ্রহ এবং সরেজমিন তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে ডায়রিয়ার সংক্রমণের মূল কারণ জানা যাবে। তিনি আরও জানান, ইপিজেডের সবকটি কারখানাকে ওয়াটার সিস্টেম সম্পর্কে সচেতন হতে বলা হয়েছে।