উজানে ভারী বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে। আজ সোমবার সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার মাত্র ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ফলে তিস্তাপাড় ও নদীর চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে নতুন করে বন্যার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, গতকাল রোববার সকাল থেকেই তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। সন্ধ্যায় তা বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আজ সোমবার সকাল ৯টায় পানির প্রবাহ দাঁড়িয়েছে ৫২ দশমিক ১৪ সেন্টিমিটারে, যা বিপৎসীমা (৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) থেকে মাত্র ১ সেন্টিমিটার দূরে। যেকোনো মুহূর্তে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পাউবো।
তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার ডিমলা উপজেলার নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে আমন ফসলের খেত এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কয়েকটি চরের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
ডিমলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল থেকে নদীর পানি বাড়ছে এবং আজ সকাল থেকে বিভিন্ন গ্রামে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।’ কিসামত চরের বাসিন্দা সামসুল আলম বলেন, ‘নদীতে পানি বাড়লেই প্রায় ২২টি চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। আমরা বড় বন্যার আশঙ্কা করছি।’
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি গ্রাম ও চরাঞ্চল ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, উজানের ঢল সামাল দিতে ব্যারেজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, উজানের ঢলে আর বর্ষণে তিস্তার পানির প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও ছুঁই ছুঁই করছে। তবে আপাতত বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই।