হোম > সারা দেশ > নীলফামারী

লাভের আশায় লোকসানে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি 

নীলফামারীতে কোল্ডস্টোরেজে মজুত রাখা আলু। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঋণ নিয়ে ৪০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার আবদুর রাজ্জাক। লাভের আশায় ৮০০ বস্তা আলু কোল্ড স্টোরেজে মজুত রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি বাজারে দামের ধসে বাধ্য হয়ে প্রতি বস্তা আলুর স্লিপ ১০০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। এতে তাঁর লোকসান দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬ লাখ টাকা। ঋণের চাপে এখন তাঁর পথে বসার দশা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবদুর রাজ্জাক একা নন। দেশের অন্যতম আলু উৎপাদনকারী জেলা নীলফামারীতে কোল্ড স্টোরেজে মজুত করা আলু নিয়ে সংকটে পড়েছেন অসংখ্য আলুচাষি ও ব্যবসায়ী। তাঁরা বলছেন, বাজারে আলুর দামে বড় ধরনের পতন হওয়ায় উৎপাদন খরচ উঠছে না। অনেক ক্ষেত্রে বস্তার দামও উঠছে না বলে দাবি তাঁদের। লোকসান সামলাতে না পেরে অনেক কৃষক বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন।

বর্তমানে নীলফামারীর ১১টি কোল্ড স্টোরেজে আলু সংরক্ষণের মোট সক্ষমতা ৯০ হাজার ১০০ টন। সেখানে জমে আছে শুধু আলুর বস্তা নয়, হতাশ কৃষকের স্বপ্নও। দাম স্বাভাবিক না হলে আগামী মৌসুমে আলু চাষে আগ্রহ হারাতে পারেন অনেক কৃষক এমন আশঙ্কাই করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত মৌসুমে নীলফামারীতে প্রায় ৫ লাখ ৫০ হাজার টন আলু উৎপাদন হয়। ভালো দামের প্রত্যাশায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা জেলার বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজে আলু মজুত করেন। মজুত করা ওই আলুর পরিমাণ প্রায় ৭৫ হাজার ৭০০ টন। তবে মৌসুম শেষে বাজারে হঠাৎ করে দাম পড়ে যাওয়ায় সেই আলু বিক্রি করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ডোমার উপজেলার আলুচাষি আবদুল কাদের বলেন, ‘প্রতি বস্তা আলু তুলতেই খরচ পড়েছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। এখন বাজারে পাচ্ছি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। এভাবে হলে আলু চাষ করা আর সম্ভব না।’

ডিমলা উপজেলার চাষি নাউতারা এলাকার সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছি। কোল্ড স্টোরেজের ভাড়া আর পরিবহন খরচ মিলিয়ে চাপ বেড়েই চলেছে।’

কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাষি মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ করেন, বাজার ব্যবস্থাপনা ঠিকমতো না হওয়ায় চাষিরা এমন ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তিনি বলেন, প্রতিবছর উৎপাদন বাড়ছে, কিন্তু বাজার ব্যবস্থাপনা নেই। এবার আলু তুললেই লোকসান।

অন্যদিকে শহিদুল হোসেন নামের এক আলু ব্যবসায়ী বলেন, ‘চাষিদের কাছ থেকে আলু কিনে কোল্ড স্টোরেজে রেখেছিলাম। এখন বাজারে যে দাম, তাতে আলু তুললেই ক্ষতি।’ তিনি বলেন, লাভ তো দূরের কথা, প্রতি বস্তায় লোকসান গুনতে হবে আরও ১০০ টাকা।

কোল্ড স্টোরেজসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, চাষি ও ব্যবসায়ীরা লোকসানে থাকায় আলু তোলার গতি কমে গেছে।

স্থানীয় কৃষিবিদ আবু নোমান সায়েম বলেন, আলুর উৎপাদন বাড়লেও রপ্তানি, প্রক্রিয়াজাত শিল্প ও কার্যকর বাজার ব্যবস্থাপনার অভাব রয়েছে। ফলে প্রতিবছর কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

নীলফামারী কৃষি বিপণন দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ টি এম এরশাদ আলম খান বলেন, বাজারে আলুর দাম না বাড়া পর্যন্ত কোল্ড স্টোরেজে রাখার সময় বাড়ানো ছাড়া কৃষকের সামনে তেমন বিকল্প নেই।

মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেলেন সৈয়দপুরের এক কলেজের ৪৫ শিক্ষার্থী

ভূমিদস্যুদের কবল থেকে জমি উদ্ধারের দাবি

ময়দা দিয়ে তৈরি হতো ওষুধ, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

রেলওয়ের জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণ, প্রকৌশলীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ইটভাটায় কৃষিজমির মাটি ব্যবহার, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

বাংলাদেশ এখন অস্থির সময় পার করছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ট্রাকচাপায় ইপিজেড শ্রমিকের মৃত্যু

ডিমলায় সার না পেয়ে ডিলারের গুদাম ভাঙচুর-লুট

নীলফামারীতে ট্রাকচাপায় নৈশপ্রহরী নিহত

শ্রমিক নেতাকে মারধর, রংপুর-নীলফামারী বাস চলাচল বন্ধ