নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলীম জীবন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হাইকোর্ট থেকে জামিনে আসা উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগ, যুবলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন।
আজ রোববার দুপুর সোয়া ১টার দিকে উপজেলার গেট এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নলডাঙ্গা থানা-পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নলডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলীম জীবন হত্যা মামলার প্রধান আসামি উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বেশ কিছুদিন ধরেই পলাতক ছিলেন। গত ১০ অক্টোবর তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় আসেন। এরপর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা তৌহিদুর রহমান লিটনের নেতৃত্বে চেয়ারম্যান আসাদের বিচারের দাবিতে নলডাঙ্গা উপজেলা বিসমিল্লাহ হাসপাতালের সামনে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
এ সময় দুপুর সোয়া ১টায় উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ উপজেলা পরিষদে গিয়ে অফিস করে ফেরার পথে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় আসাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। পরে পুলিশ আসাদকে উদ্ধার করে বাসায় পৌঁছে দেয়। পরে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা তৌহিদুর রহমান লিটন বলেন, ‘আমরা ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলীম জীবন হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করি। এ সময় কে বা চেয়ারম্যান আসাদের ওপর হামলা করেছে আমার জানা নাই। তবে শুনেছি চেয়ারম্যান আসাদের লোকজন ছাত্রলীগ নেতা জীবনের বাবা ফরহাদ হোসেনের ওপর হামলা করলে এ ঘটনা ঘটে।’
নাটোর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোহসীন বলেন, ‘কারা উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদের ওপর হামলা করেছে তার সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজ পর্যালোচনা করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’
উল্লেখ্য, ফেসবুক লাইভে দুর্নীতির অভিযোগ তোলায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর নলডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা জামিউল আলীম জীবনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে নলডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জীবনের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদসহ তাঁর দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ হাই কোট থেকে ৬ সপ্তাহের জামিনে আসেন।