মাছ চুরির অভিযোগ দিয়ে অব্যাহত হুমকির মুখে নাটোরের নলডাঙ্গায় চন্দন কুমার (১৩) নামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এক কিশোর কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার পূর্ব মাধনগর সিং পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। চন্দন কুমার সিং ওই গ্রামের প্রদীপ সিং এর ছেলে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদিন ডলার হোসেন ও নিহত চন্দনের পিতা প্রদীপ সিং ও এলাকাবাসী জানান, উপজেলার পূর্ব মাধনগর গ্রামের মাছ চাষি আব্দুর রাজ্জাগের পুকুরে গত বৃহস্পতিবার রাতে মাছ চুরির ঘটনা ঘটে। এ মাছ চুরির জন্য চন্দনসহ কয়েকজন কিশোরকে দায়ী করেন মাছ চাষি আব্দুর রাজ্জাগ। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে মাছ চুরির বিচার চেয়ে মাধনগর বাজার কমিটির কাছে নালিশ দেন তিনি। আগামী রোববার সালিশি বৈঠক বসার কথা। পুকুরের মালিক আব্দুর রাজ্জাগ দাবি তাঁর পুকুর থেকে ১০ লাখ টাকার মাছ চুরি করেছে চন্দন ও তাঁর বন্ধুরা। পরিবার ও স্থানীয়দের অভিযোগ সালিশি বৈঠকে তাঁদের পিটিয়ে টাকা আদায় করা হবে বলে হুমকিও দেন আব্দুর রাজ্জাগ।
মাছ চাষির হুমকির মুখে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় চন্দন কীটনাশক (গ্যাস ট্যাবলেট) খায় বলে অভিযোগ করে তাঁর পরিবার। পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাঁকে চিকিৎসার জন্য নাটোর সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।
রাতেই নলডাঙ্গা থানা-পুলিশ খবর পেয়ে আদিবাসী কিশোর চন্দনের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
মাছ চাষি আব্দুর রাজ্জাগ জানান, মাছ চুরির ঘটনায় চন্দনের বন্ধু নাজমুল হোসেনকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মাছ চুরির সঙ্গে চন্দনের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে নাজমুল। পরে তাঁদের থানা-পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার কথা বললে অভিভাবকেরা স্থানীয়ভাবে সালিসি বৈঠকে মীমাংসার প্রস্তাব দেন। সেই অনুযায়ী আগামী রোববার সালিশি বৈঠক বসার কথা হয়। এ ঘটনায় চন্দনকে কোন হুমকি দেননি বলে জানান চাষি।
এ ব্যাপারে নলডাঙ্গা থানার ওসি (তদন্ত) আকবর আলী জানান, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কিশোর চন্দন কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নাটোর মর্গে পাঠানো হয়েছে। হুমকির ভয়ে আত্মহত্যা না অন্য কোন কারণে আত্মহত্যা পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।