নলডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিতে তৈরি করা হয়েছে ৫০ শয্যার আধুনিক হাসপাতাল। উদ্বোধন করা হয় ২০২১ সালে। কিন্তু চিকিৎসক, নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি উদ্বোধনের প্রায় চার বছরেও। উপজেলার বাসিন্দাদের চিকিৎসাসেবা পেতে এখনো ছুটতে হচ্ছে জেলা সদর কিংবা পাশের জেলায়। এতে যেমন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে, তেমনি আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তারা।
এদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মচারীর আবাসিক সুবিধার জন্য আলাদা তিনটি আধুনিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু সেই ভবনগুলো অলস পড়ে থাকায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
নাটোর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র বলেছে, ২৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নলডাঙ্গা ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ শেষ হয় ২০২০ সালের প্রথম দিকে। এর দেড় বছর পর অর্থাৎ ২০২১ সালের ২৭ জুলাই হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের আগে এক্স-রে মেশিনসহ যাবতীয় সরঞ্জামও সরবরাহ করা হয়। কিন্তু নিয়োগ দেওয়া হয়নি চিকিৎসক, নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবল।
উদ্বোধনের পর নাটোর সদর হাসপাতালের দুজন চিকিৎসক শুধু বহির্বিভাগে ব্যবস্থাপত্র দেন। এ ছাড়া বহির্বিভাগে সেবা নিতে আসা রোগীদের টিকিট ও ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ সরবরাহের জন্য আছেন দুজন কর্মচারী। প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে জরুরি বিভাগও চালু করা সম্ভব হয়নি। পড়ে থেকে মূল্যবান যন্ত্রপাতিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার বুড়িরভাগ গ্রামের সালাম উদ্দিন বলেন, ‘হাঁটুর ব্যথার চিকিৎসা নিতে এসেছিলাম। এসে জানতে পারলাম, এখনো সব বিভাগ চালু হয়নি। বহির্বিভাগ থেকে আমাকে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে বলা হয়েছে। বাইরে থেকে এসব পরীক্ষা করাতে বলেছেন ডাক্তার।’
আরেক রোগী মরিয়ম বেগম বলেন, ‘চোখের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছিলাম। এসে জানলাম, চোখের ডাক্তারই নেই। তাই ফিরে যাচ্ছি। আমার স্বামী নাই, আমি গরিব মানুষ। চোখের চিকিৎসা করাতে বাইরে অনেক টাকা লাগবে।’
এ বিষয়ে নাটোর সিভিল সার্জন ডা. মোহম্মদ মুক্তাদির আরেফিন বলেন, হাসপাতালটিতে ১৪ জন চিকিৎসক ও অন্যান্য পদে ১৭ জনের জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষের দিকে। এ বছরের শেষ দিকে পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবা চালু করা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।