ভারতের একটি নম্বর থেকে নাটোর কারাগারের জেলার শেখ মো. রাসেলকে সপরিবারে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নাটোর-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল পরিচয়ে ওই হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা বিবেচনায় নাটোর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন জেলার শেখ মো. রাসেল।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, শিমুলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত যুবলীগ কর্মী রাশেদুল ইসলাম কোয়েলের জামিন বিষয়ে পুলিশ বা গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করতে জেলারকে নির্দেশনা দেন শিমুল। এ নির্দেশনা না মেনে জামিন হওয়া কোয়েলকে পুনরায় কুষ্টিয়া জেলগেট থেকে গ্রেপ্তার হলে ক্ষুব্ধ শিমুল জেলারকে এ হুমকি দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান যুবলীগ নেতা রাশেদুল ইসলাম কোয়েল। ১১ অক্টোবর বিকেলে কোয়েলকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত থেকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা গ্রেপ্তার করেন। পরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নাশকতা ও হত্যার অভিযোগে নাটোরে কোয়েলের নামে থাকা ১০টি মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সম্প্রতি কোয়েল কয়েকটি মামলায় জামিন পান।
নাটোর কারাগারের জেলার শেখ মো. রাসেল অভিযোগ করেন, প্রায় ১৫ দিন আগে কুষ্টিয়া থানার একটি মামলায় হাজিরার জন্য কোয়েলকে নাটোর থেকে কুষ্টিয়া পাঠানো হয়। এই অবস্থায় ২২ অক্টোবর দুপুরে ভারতের একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে তাঁর ব্যক্তিগত নম্বরে কল আসে। কল করা ব্যক্তি নিজেকে সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুল পরিচয় দেন। তিনি কোয়েলের জামিনের কাগজটি দ্রুত কুষ্টিয়া কারাগারে পাঠাতে বলেন; পাশাপাশি বিষয়টি কোনো গোয়েন্দা সংস্থা বা পুলিশ কর্মকর্তাকে যেন না জানানো হয়, সেই নির্দেশ দেন। অন্যথায় ‘সমস্যা হবে’ বলে হুমকি দেন।
জবাবে জেলার বলেন, তিনি কারাবিধি মেনেই জামিনের কাগজ কুষ্টিয়া পাঠাবেন এবং এ নিয়ে তাঁর কথা না বলাই ভালো। এরপর কোয়েল আজ বৃহস্পতিবার সব কটি মামলায় জামিনে মুক্তি পেলে কুষ্টিয়া জেলা ডিবি পুলিশ দুপুরে তাঁকে জেলগেট থেকে আবার গ্রেপ্তার করে। এর পরপরই জেলার শেখ মো. রাসেলের সরকারি মোবাইলে আবারও শিমুলের কল করা নম্বর থেকে একটি হুমকিমূলক বার্তা আসে। সে বার্তায় লেখা ছিল, ‘আপনি যে অন্যায় কাজটি করলেন, আল্লাহ যদি আমাকে বাঁচিয়ে রাখেন, মনে রাখবেন আপনার বৌসহ পুরো পরিবারকে কিভাবে বাঁচাবেন, রক্ষা করবেন সেটা ঠিক করে রাখবেন।’
জেলার শেখ মো. রাসেল বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে আমি ও আমার পরিবার আতঙ্কে আছি। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে থানায় জিডি করেছি।’
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে সংশ্লিষ্ট নম্বরে শিমুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
নাটোর সদর থানার ওসি মাহাবুর রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।