ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীতে বিভিন্ন ঘটনায় বাবা-ছেলেসহ মৃতের সংখ্যা বেড়ে পাঁচজনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন বিভিন্ন বয়সী শতাধিক মানুষ। আহতেরা পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সদর হাসপাতাল ও জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। সদর হাসপাতাল ও পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষসহ নরসিংদীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন-সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলি এলাকার দেলোয়ার হোসেন উজ্জ্বল (৭৩) এবং তার ছেলে মো. ওমর (৮), পলাশ উপজেলার মালিতা পশ্চিমপাড়া গ্রামের কাজেম আলী ভূইয়া (৭৫), কাজীরচর নয়াপাড়া গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে নাসির উদ্দিন (৬৫) এবং শিবপুরের জয়নগর ইউনিয়নের আজকীতলা গ্রামের ফোরকান মিয়া (৪৫)।
ভুক্তভোগীদের স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলি এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনের দেয়াল থেকে ইট ধসে পাশের বাড়ির ছাদের ওপর পড়ে। এতে ওই বাড়ির বাড়ির সানশেড ভেঙ্গে মো. ওমর, তার বাবা দেলোয়ার হোসেন ও দুই বোন আহত হয়। তাদেরকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে আশংকাজনক অবস্থায় বাবা ও ছেলেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নিয়ে গেলে ছেলে মো. ওমরকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবা দেলোয়ার হোসেনও মারা গেছেন।
হাসপাতালে থাকা ওমরের চাচা জাকির হোসেন বলেন, ভূমিকম্পের সময় দোলোয়ার তার ছেলে ওমর ও দুই মেয়েকে নিয়ে বাইরে যাচ্ছিলেন। এসময় বাড়ির সানশেড ভেঙ্গে তাদের ওপর পড়ে। পরে সবাই মিলে তাদেরকে আহত অবস্থায় হাসপাতাল নিয়ে গেলে দেলোয়ার ও ওমরকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়েছিলেন চিকিৎসক। সেখানে দুজনই মারা গেছেন।
এদিকে পলাশ উপজেলার মালিতা পশ্চিমপাড়া গ্রামের কাজেম আলী ভূইয়া (৭৫) মাটির ঘরের দেয়ালের নিচে চাপা পড়েন। সেখান থেকে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে নরসিংদী ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আফজাল হোসাইন জানান, ভূমিকম্পের সময় গাছ থেকে পড়ে আহত হন শিবপুর উপজেলার ইউনিয়নের আজকীতলা পূর্বপাড়া গ্রামের শরাফত আলীর ছেলে ফোরকান মিয়া (৪৫)। আহত অবস্থায় তাকে উপজেলা হাসপাতালে আনার পর মারা যান তিনি।
এছাড়া কাজীরচর নয়াপাড়া গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে নাসির উদ্দিন (৬৫) ভূমিকম্পের সময় আতংকে স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন।