নরসিংদীর শিবপুরে তোতা মিয়া নামের মৃত এক বীর মুক্তিযোদ্ধার সনদ ব্যবহার করে ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে তুতা মিয়া নামে আরেক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবদুল মোতালিব খান। উপজেলা প্রশাসন বলছে, অভিযোগ পাওয়ার পরে সম্মানী ভাতা বন্ধ করা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, বীরমুক্তিযোদ্ধা তোতা মিয়া ২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। তিনি শিবপুরের মাছিমপুর ইউনিয়নের দত্তেরগাঁও মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার ছেলে। জীবদ্দশায় তিনি মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা গ্ৰহণ করতেন। যার ভারতীয় মুক্তিবার্তা নম্বর ৩৬৫৩। ব্যক্তি জীবনে তিনি অবিবাহিত ছিলেন। কোনো ওয়ারিশ না থাকায় মৃত্যুর পর তাঁর প্রাপ্য সম্মানী ভাতা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তাঁর সম্মানী ভাতা উত্তোলন করছেন উপজেলার যোশর ইউনিয়নের চান্দেরটেক গ্রামের মৃত ডেঙ্গু মিয়ার ছেলে তুতা মিয়া। ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তুতা মিয়া যোশর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ডেঙ্গু মিয়াকে মৃত গফুর ভূঁঞা ওরফে (ডেঙ্গু মিয়া) উল্লেখ করে সনদ নিয়েছেন। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রে তাঁর নাম তুতা মিয়া, পিতা: মৃত ডেঙ্গু মিয়া, মাতা: মৃত মরিয়ম নেছা। তাঁরও ভারতীয় মুক্তিবার্তা নম্বর ৩৬৫৩। তিনি ইতিমধ্যে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ৩লাখ টাকা ঋণ ও মাসিক সম্মানী ভাতা উত্তোলন করছেন।
এ নিয়ে জানতে চাইলে যোশর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফাইজুল ইসলাম বলেন, ‘মৃত তোতা মিয়া ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর ভারতীয় তালিকার সনদ নম্বর ৩৬৫৩। তাঁর সনদের নম্বর ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা উত্তোলন করছেন চান্দেরটেক গ্রামের মৃত ডেঙ্গু মিয়ার ছেলে তুতা মিয়া। তিনি যশোর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সনদ নিয়ে তার বাবার নাম মৃত গফুর ভূঁঞা ওরফে ডেঙ্গু মিয়া ব্যবহার করছেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তুতা মিয়া বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলাম। তাই আমার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারিনি। আমি একজন ভারতীয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বীরমুক্তিযোদ্ধা। একই মুক্তিবার্তা নম্বরে দুইজনের নাম থাকার বিষয়টি আমার জানা নেই।’
শিবপুর সোনালী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মোকাব্বির হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর সম্মানী ভাতা উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একই নম্বারে দুইজনের নামে এমআইএস কীভাবে হয়েছে তা আমার জানা নেই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জিনিয়া জিন্নাত বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পরে সম্মানী ভাতা বন্ধ করা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’