স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে গড়ে তোলা হয় কমিউনিটি ক্লিনিক। এসব ক্লিনিকের মানসম্মত সেবায় উপকৃত হচ্ছে গ্রামের সাধারণ মানুষ। সর্দি-জ্বর, ঠান্ডা, গর্ভবতী নারী, নবজাতকসহ নানা ধরনের রোগী প্রতিদিন আসছে চিকিৎসা নিতে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে এই ক্লিনিকগুলো।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার গ্রামাঞ্চলে স্থাপন করা হয়েছে মোট ৩৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক। এর মধ্যে কাজীপুর, ভরাট ও খাসমহল কমিউনিটি ক্লিনিক ভবনের অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে নাজুক। সম্প্রতি কাজীপুরের ক্লিনিকটি পুনর্নির্মাণ করা হলেও ভরাট ও খাসমহল ক্লিনিক দুটি এখনো চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কোথাও দেয়ালে ফাটল, কোথাও সাপের খোলস—সব মিলিয়ে আতঙ্কিত স্বাস্থ্যকর্মী ও গ্রামবাসী।
ভরাট কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি (কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার) মোছা. শারমিন আক্তার বলেন, ‘চিকিৎসা দিতে গিয়ে প্রতিদিন ভয় নিয়ে কাজ করতে হয়। চারপাশে জঙ্গল। মাঝেমধ্যে ক্লিনিকের ঘরের ভেতরেই সাপের খোলস দেখা যায়।’
এই ক্লিনিকে প্রতিদিন গড়ে ৪০-৪৫ জন রোগী আসে। নবজাতক, গর্ভবতী নারী, ঠান্ডা-কাশিসহ নানা রোগে ভোগা মানুষ চিকিৎসা নিতে আসে। রোগীদের জন্য ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা থাকলেও উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ওষুধ মেলে না বলে জানান শারমিন আক্তার।
সেবা নিতে আসা পলাশ আহমেদ বলেন, ‘পেছনের জানালাগুলো ভাঙা। জঙ্গলঘেরা চারপাশ। ছাদ ফেটে পড়ে পানি। ক্লিনিকটি নতুন করে নির্মাণ করা এখন সময়ের দাবি।’
খাসমহল কমিউনিটি ক্লিনিকের অবস্থা আরও করুণ। সেখানে ভবন ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সিএইচসিপি মো. সোহেল রানা বলেন, ‘সীমানাপ্রাচীর ভাঙা। প্রতিদিন আতঙ্কে থাকি। ক্লিনিকের অবস্থার কথা বারবার জানানো হয়েছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক মো. আব্দুল হান্নান জানান, গাংনী উপজেলায় ৩৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে, যার মধ্যে ভরাট ও খাসমহল দুটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কাজীপুর ক্লিনিকের পুনর্নির্মাণ শেষ হলেও এখনো হস্তান্তর হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুপ্রভা রানী বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ক্লিনিকগুলোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সেবা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’