মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন ও সন্তোষজনক বাজারদর পাওয়ায় কৃষকদের মুখে ফুটেছে আনন্দের হাসি। আবাদ করতে গিয়ে শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশকসহ নানা খরচ বেড়ে গেলেও ভালো ফলন ও বাজারদর সেই চাপ অনেকটা কাটিয়ে দিয়েছে। ধানের পাশাপাশি বিচালির দামও এই মৌসুমে ব্যতিক্রমীভাবে বেশি—এক বিঘার বিচালি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায়।
গাংনীর জোড়পুকুর, তেরাইল, বামন্দী, বালিয়াঘাট, হাড়াভাঙ্গা এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা যায়, ধান কাটতে কৃষকদের পাশাপাশি ব্যস্ত সময় পার করছেন পরিবারের নারী সদস্যরাও। চাষিরা জানান, আমনের ফলন এবং দাম—দুই দিক থেকেই তাঁরা সন্তুষ্ট। যদিও কিছু এলাকায় কারেন্ট পোকার আক্রমণে ফলন কিছুটা কমেছে।
তেরাইল এলাকার কৃষক খবির উদ্দিন বলেন, ‘এ বছর বিঘাপ্রতি ১৮ থেকে ২০ মণ ধান পেয়েছি। কারেন্ট পোকার আক্রমণ থাকলেও কীটনাশক ব্যবহার করে তা নিয়ন্ত্রণ করেছি। অধিকাংশ জমির ফলন খুবই ভালো হয়েছে। ধানের দামে আমরা খুশি।’
অন্য কৃষক আলতাব হোসেন বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে এবারও ভালো ফলন পেয়েছি। বিঘায় ১৮-১৯ মণ হয়েছে। আমন চাষে বিঘাপ্রতি ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়, কিন্তু ধান ঘরে তুলতে পারলে সেই খরচ আর মনে থাকে না। তা ছাড়া বিচালির এই যে দাম—এক বিঘায় ১০-১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তাতে ভালোই লাভ হচ্ছে।’
ধান ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমানে ধানের বাজারদর মণপ্রতি ১ হাজার ১০০ টাকা। দাম বাড়বে কি না এখনই বলা যাচ্ছে না।’
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। ফলন ও দাম দুটিতেই কৃষকেরা সন্তুষ্ট।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গাংনীর কৃষকেরা এই মৌসুমে ভালো ফলন পাচ্ছেন। যেসব জমিতে কারেন্ট পোকা আক্রমণ করেছে, সেখানে কিছু ফলন হ্রাস পেলেও তা বিচালির দামে পুষিয়ে যাচ্ছে। চাষিদের সঙ্গে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।’