হোম > সারা দেশ > মাগুরা

মাগুরার পয়োবর্জ্য পরিশোধনাগার: জলে গেল ১৪ কোটি টাকার প্রকল্প

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা

মাগুরায় ১৪ কোটি টাকা বরাদ্দে ২০২১ সালে নির্মাণ করা হয় স্যানিটারি ল্যান্ডফিল ও পয়োবর্জ্য পরিশোধনাগার। উদ্দেশ্য ছিল পরিবেশ রক্ষা এবং জৈব সার ও বায়োগ্যাস উৎপাদন করা। কিন্তু তিন বছর আগে প্রকল্পটির কাজ শেষ হলেও উদ্বোধন কিংবা কার্যক্রম শুরু কোনোটিই হয়নি। উল্টো কয়েক মাস ধরে সেখানে ফেলা বর্জ্য পচে ভাগাড়ে পরিণত হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে সরকারের প্রকল্পটির কোনো সুফল পাচ্ছেন না মাগুরাবাসী। 

জানা গেছে, যশোর-মাগুরা সড়কের পাশে পৌরসভার শিমুলিয়া এলাকায় ৩ একর জমি নিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। তৃতীয় নগর পরিচালনা ও অবকাঠামো উন্নীতকরণ প্রকল্পের আওতায় স্যানিটারি ল্যান্ডফিল ও পয়োবর্জ্য পরিশোধনাগারটি নির্মাণ করা হয়। এতে অর্থায়ন করে বাংলাদেশ সরকার, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট। ২০২০ সালের আগস্টে কাজ শুরু হয়ে ২০২১ সালের নভেম্বরে শেষ হয়।

মাগুরা পৌরসভার কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, সাবেক মেয়র খুরশীদ হায়দার টুটুল নিজস্ব ঠিকাদারকে দিয়ে প্রকল্পের কাজ করিয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে অনিয়মের সমালোচনা করার কেউ সাহস করেননি। প্রকল্পের বরাদ্দ যথাযথ ব্যবহার নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তৎকালীন মেয়র খুরশীদ হায়দার টুটুলকে আর জনসমক্ষে দেখা যাচ্ছে না।

গত সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, জৈব সার ও বায়োগ্যাস তৈরির জন্য বিশাল চৌবাচ্চা (চেম্বার) করা হয়েছে। সেখানে বর্জ্য ফেলার কথা ছিল। প্রকল্পটি উদ্বোধন না হলেও কয়েক মাস ধরে সেখানে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। শুধু ওই চেম্বারে নয়, প্রকল্প এলাকাজুড়েই আশপাশের বাসাবাড়ির ময়লা ফেলা হচ্ছে। পৌরসভার গাড়িতে করে মাটি এনে তা আধা চাপা দেওয়া হয়। ফলে পরিশোধনাগারটি এখন নিজেই ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়ে আছে।

পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ময়লা-আবর্জনা এখন সড়কের পাশে, নদীর পাশে পড়ে থাকে। পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা গাড়ি দিয়ে বর্জ্য নিয়ে গেলেও তা ফেলা হয় শিমুলিয়া এলাকার যশোর-মহাসড়কের পাশেই। তাহলে এত টাকা খচর করে এ প্রকল্প করে কী লাভ হলো? মেয়র টুটুল দুই মেয়াদে থাকলেন অথচ প্রকল্পটির কোনো সুফলই আমরা পেলাম না। উল্টো ট্যাক্স-ভ্যাট তো লেগেই আছে পৌরসভার। এ সবই আগের মেয়রের ঠিকাদারি ব্যবসা ছাড়া কিছুই নয়।’

পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের রজব আলী বলেন, বড় বড় প্রকল্প এনে যদি তার কোনো সুফল মানুষ না পান, তবে তা প্রকল্প নিয়ে বাণিজ্য ছাড়া আর কী বোঝায়। এসব জনগণের টাকা লুটপাট ছাড়া কিছুই নয়।

শিমুলিয়া এলাকার প্রকল্পের পাশেই একটি পুকুরে মাছ চাষ করতেন মুস্তাক হোসেন। তিনি বলেন, ‘এখন যত ময়লা আছে, তা এই প্রকল্পের পুকুরে (চেম্বার) ফেলা হয়। কিন্তু কোনো প্রক্রিয়ায় তা ধ্বংস করা হয় না। সেই বর্জ্যের বিষাক্ত পানি নালা দিয়ে আমার পুকুরে নেমে এসে প্রায় ১০ হাজার টাকার মাছ মরে গেছে। প্রকল্প করেছে মানুষের উপকারের জন্য, অথচ তা কোনো কাজেই আসেনি। উল্টো ক্ষতি বাড়িয়েছে।’

এ বিষয়ে পৌরসভার সাবেক মেয়র খুরশীদ হায়দার টুটুলের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

মাগুরা পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রকল্পটি অনেক দিন উদ্বোধনের অপেক্ষায় পড়ে ছিল। তবে বেশ কিছু দিন আগে কিছু কাজ শুরু হয়েছে। আপাতত লোকবল ও তহবিলের সংকট রয়েছে। তবে সীমিত পরিসরে কিছু বর্জ্য ফেলার কাজ চলছে। প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী বায়োগ্যাস ও জৈব সার তৈরি করা এখন সম্ভব নয়। আপাতত বর্জ্য মাটিচাপা দিয়ে রাখা হচ্ছে। বড় ধরনের বাজেট ছাড়া এটা থেকে পুরোপুরি সেবা পাওয়া সম্ভব নয়। 

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

মাগুরায় পেট্রলবোমা হামলায় দুই সরকারি অফিসে অগ্নিকাণ্ড

মহম্মদপুরে গ্রামীণ ব্যাংকে অগ্নিসংযোগ

সালিসের মধ্যে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা, প্রতিপক্ষের বাড়িতে আগুন

মাগুরায় খালে ডুবে এক পরিবারের তিন শিশুর মৃত্যু

‘লালু বলে ডাক দিলেই ছুটে আসে বেজিটি’

ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বিয়ে

মাগুরায় তেলবাহী ট্রাক ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ২০

টিসিবির ৭৮ টন চাল উদ্ধার

মাগুরার যুবকের বিয়েতে ২ সৌদি নাগরিক