যশোরের মনিরামপুরে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়সংলগ্ন হরিহর নদে মেশিন বসিয়ে প্রকাশ্যে বালু তোলা হচ্ছে। মনিরামপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল শ্রমিক খাঁটিয়ে বালু তুলে পৌরসভার মাঠ ভরাট করছেন। এর আগে একই স্থান থেকে বালু তুলে এসিল্যান্ড অফিস-সংলগ্ন প্রভাতী বিদ্যাপীঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট করেছেন প্যানেল মেয়র।
প্যানেল মেয়র কামরুজ্জামানের দাবি, পৌরসভার স্বার্থে বালু তোলা হচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটে অনুমতি নেওয়া ছিল। তবে, কার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছেন সেটা বলেননি তিনি।
এদিকে নদ খুঁড়ে বালু তোলায় ক্ষতির আশঙ্কায় উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন হরিহর নদপারের তাহেরপুর এলাকার বাসিন্দারা। কোনো প্রতিকার না হওয়ায় উদ্বিগ্ন তাঁরা।
স্থানীয়রা আরও জানান, নদ থেকে পাইপে বালু টেনে এনে প্রথমে প্রভাতী বিদ্যাপীঠের নতুন ভবনের ভেতরে ও মাঠ ভরাট করা হয়েছে। এখন পাকা সড়কের ওপর দিয়ে পাইপ টেনে নদের বালু দিয়ে পৌরসভার মাঠ ভরাটের কাজ চলমান আছে।
অভিযোগকারীদের একজন খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজেদা খাতুন বলেন, ‘হরিহর নদের পারে আমার দোতলা বাড়ি। যেভাবে বালু তোলা হচ্ছে, তাতে যেকোনো সময় আমাদের বাড়িঘর ধসে নদীতে পড়ার আশঙ্কা করছি। বালু তোলা বন্ধ করার জন্য আমরা নদের পশ্চিম পাড়ের পাঁচ-সাত জন বাসিন্দা ইউএনও ও এসিল্যান্ডের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। একদিন রাতে মেশিন চলার সময় আমি এসিল্যান্ডকে ফোনে জানিয়েছি। তার পরও বালু তোলা বন্ধ হচ্ছে না।’
জানতে চাইলে প্যানেল মেয়র কামরুজ্জামান বলেন, কারও ক্ষতি হয় এমন কাজ করা যাবে না। পৌরসভার স্বার্থে বালু তোলা হচ্ছে। সাংবাদিক হলেও বিষয়টি আপনারা বিবেচনা করে দেখতে পারেন।
কামরুজ্জামান কামরুল আরও বলেন, প্রভাতী বিদ্যাপীঠের মাঠে বালু তোলার সময় অনুমতি নিয়ে করেছি। পৌরসভার মাঠের জন্য অনুমতি নেওয়া হয়নি।
মনিরামপুর পৌরসভার মেয়র কাজী মাহমুদুল হাসান বলেন, মাটি ফেলে পৌরসভার মাঠ ভরাট করেছি। আগে ওরা স্কুলের মাঠ ভরাট করেছে। সেখান থেকে লাইন টেনে একদিন মাত্র পৌরসভার মাঠে বালু ফেলা হয়েছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলী হাসান বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে লোক পাঠিয়েছিলাম। প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে খোঁজ নিয়ে বালু তোলার বিষয়টি জানতে পেরেছি। এটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন বলেন, ‘নদ থেকে বালু তোলার ব্যাপারে কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি দেখছি।’