রাজকীয় পোশাক আর হাতে খোলা তরবারি নিয়ে হাতির পিঠে চড়ে ছুটেছেন যুবক। পেছনে মোটরসাইকেলের বহর। বাজছে বাদ্যবাজনা। মনে হবে সমভিব্যাহারে রাজা যুদ্ধে যাচ্ছেন অথবা কোনো নাটক বা সিনেমার শুটিং। আসলে তা নয়, বাবার ইচ্ছাপূরণে যুবক যাচ্ছেন বিয়ে করতে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়া এলাকা থেকে পায়রা চত্বর ঘুরে জোহান পার্কের উদ্দেশে রওনা দেন রাফাতুজ্জামান প্রান্ত। রাস্তার দুপাশে হাতির বর দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় জমায়। এদিকে পুরোনো দিনের রেওয়াজ অনুসারে হাতি নিয়ে বিয়ে অনুষ্ঠানে যাওয়ার এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই।
জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়া এলাকার এনজিও কর্মকর্তা আবু বক্কর হোসেনের ছেলে রাফাতুজ্জামান প্রান্তের সঙ্গে স্থানীয় উপশহরপাড়ার আবু সেলিমের কন্যা জান্নাতুল ফিজা ঊর্মির বিয়ে দিন ধার্য করা হয়। নির্ধারিত দিনে দুপুর ২টার দিকে বর হাতি সাজিয়ে পিঠে চড়ে বিয়ের অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান। বরযাত্রীরা মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলযোগে অনুষ্ঠানে পৌঁছান। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাতেই হাতির পিঠে চড়ে একইভাবে কনেকে নিয়ে বাড়িতে ফেরেন। কনেকে নেওয়া হয় রাজকীয় পালকিতে করে।
বরযাত্রীরা জানান, নাটক-সিনেমায় হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে করতে যাওয়ার দৃশ্য তাঁরা দেখেছেন। তবে বাস্তবে এমন বিয়েতে বরযাত্রী হবেন ভাবতেও পারেননি। এই বিয়েটা বেশ উপভোগ করেছেন তাঁরা।
এমন ব্যতিক্রম বিয়ের অনুষ্ঠান নিয়ে উপশহর পাড়ার আব্দুর রকিব বলেন, ‘প্রতিবেশীর মেয়েকে হাতির পিঠে চড়ে বিয়ে করতে আসায় মহল্লাবাসী বেশ আনন্দিত। তাঁরা নবদম্পতিকে মোবারকবাদ জানিয়ে বরণ করে নেন।’
বরের বাবা আবু বক্কর হোসেন বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই স্বপ্ন দেখতাম আমার ছেলেকে পুরোনো দিনের ঐতিহ্য অনুযায়ী বিয়ে দেব। তারই ফলশ্রুতিতে হাতিতে করে বর নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’