সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিমকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার বেলা ১০টার দিকে কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করে শ্যামনগর থানা-পুলিশ।
নানা অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলা এবং চারটি মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজার রায় হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গত ২৬ ডিসেম্বরের নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বারের মতো তিনি কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
শেখ আব্দুর রহিম শ্যামনগর উপজেলার জয়াখালী গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শেখ আবু দাউদের ছেলে।
দীর্ঘদিন ধরে ইতালিতে অবস্থানের পর কয়েক বছর আগে তিনি দেশে ফিরে আসেন। পরবর্তীতে স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রথমবারেই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। প্রথমবারের মেয়াদে দায়িত্ব পালনের সময় ঋণখেলাপিসহ ৫৪ টিরও বেশি মামলা হয় তার বিরুদ্ধে।
পুলিশ বলছে, বুধবার ১০টার দিকে কৈখালী এলাকা থেকে আব্দুর রহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে গ্রেপ্তারের সময় আব্দুর রহিমের কর্মী সমর্থকদের হামলায় পুলিশ কনস্টেবল রিপন আহত হন। সমন থাকা ১০ মামলায় তাৎক্ষণিকভাবে চেয়ারম্যান আবদুর রহিমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আহত পুলিশ সদস্য শ্যামনগর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এদিকে গ্রেপ্তার চেয়ারম্যানের স্ত্রী রুবাইয়া পারভীনের অভিযোগ, আটকের পর আব্দুর রহিমকে রাস্তার ওপর ফেলে বেপরোয়া মারপিট করা হয়। পুলিশের সঙ্গে নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা চেয়ারম্যানকে মারপিটে অংশ নেয়।
চেয়ারম্যানের স্ত্রী রুবাইয়া পারভিন বলেন, চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া তাঁর স্বামীর জন্য কাল হয়েছে। ইতিপূর্বে তাঁর নামে থানায় একটি জিডি না থাকলেও গত পাঁচ বছরে একে একে পঞ্চাশটিরও মামলা দিয়েছে প্রতিপক্ষ। এমনকি নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে তাকে গ্রেপ্তারের নানাভাবে চেষ্টা করা হয়। ইউনিয়নের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হলেও প্রতিপক্ষের আক্রোশের শিকার হয়েছেন তাঁর স্বামী। স্বামীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলো সুষ্ঠুভাবে পর্যালোচনা সাপেক্ষে দ্রুত সময়ের মধ্যে তার মুক্তির দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মুরশেদ বলেন, বহু মামলার আসামি আবদুর রহিমকে দীর্ঘদিন ধরে খোঁজা হচ্ছিল। আত্মগোপনে থেকে সম্প্রতি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও বুধবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনগত পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ১০ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আবদুর রহিমকে আদালতে পাঠানো হবে। ঋণখেলাপিসহ বেশ কয়েকটি মামলায় তিনি সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পলাতক ছিলেন বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।