যশোরের মনিরামপুরের হরিদাসকাটি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) মোশাররফ হোসেনকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মাহাবুর রহমানের বিরুদ্ধে। মাহাবুর মনিরামপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য ও হোগলাডাঙ্গা গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে।
আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার হোগলাডাঙ্গা বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
মনিরামপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অরবিন্দু হাজরা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাহাবুর রহমান আমার উপজেলা কমিটির সদস্য। তিনি কাউকে মারপিট করেছেন এমনটি জানা নেই।’
আহত ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘হোগলাডাঙ্গা বাজারে সরকারি খাসজমি আছে। সম্প্রতি বাজারের ইজারা হয়েছে। হোগলাডাঙ্গা বাজারের সরকারি জমির পাশে ব্যক্তিমালিকানা জমি রয়েছে। কয়েক দিন আগে আমি সরেজমিন ঘুরে এসি ল্যান্ড স্যারের কাছে জমির পরিমাণ উল্লেখ করে প্রতিবেদন দিয়েছি।’
মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, ‘হামলাকারীদের অভিযোগ, আমি ব্যক্তিমালিকানা জমি সরকারি জমি দেখিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছি। এই অভিযোগে আজ দুপুরে হোগলাডাঙ্গা বাজারে স্থানীয় মাহাবুর ও আসাদসহ তিন থেকে চারজন আমাকে কিলঘুষি মেরেছে। একপর্যায়ে তারা আমার মোটরসাইকেলে থাকা হেলমেট নিয়ে মাথায় আঘাত করে আমাকে রক্তাক্ত জখম করে।’
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলী হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ সকালে আমার দপ্তরের কানুনগো আকরাম হোসেন হোগলাডাঙ্গা বাজারে সরকারি জমি মাপতে যান। কানুনগোকে সহায়তা করতে সেখানে যান নায়েব মোশাররফ হোসেন। তিনি কানুনগোর সঙ্গে কথা বলে বেলা ১টার দিকে নিজের মোটরসাইকেলে চড়ে অফিসের উদ্দেশে বের হন। এই সময় হোগলাডাঙ্গা বাজারে নায়েবকে গতিরোধ করে মারপিট করা হয়।’
সহকারী কমিশনার আলী হাসান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি আহত নায়েবকে উদ্ধার করে মনিরামপুর হাসপাতালে ভর্তি করেছি। শুনেছি, হোগলাডাঙ্গা গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে মাহাবুর রহমান, নওশের গাজীর ছেলে আসাদ ও জলিল গাজী এবং শফিয়ার রহমানের ছেলে জুয়েল হোসেন নায়েবের ওপর হামলা চালিয়েছে। এই বিষয়ে আমাদের মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
হরিদাসকাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলমগীর কবীর লিটন বলেন, ‘সরকারি কাজে দায়িত্বরত অবস্থায় একজন নায়েবের গায়ে হাত দেওয়া গুরুতর অন্যায়। এই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি হওয়া উচিত।’
মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তন্ময় বিশ্বাস বলেন, ‘নায়েবের মাথায় সেলাই দেওয়া হয়েছে। তিনি হাসপাতালে ভর্তি আছেন।’
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’