মানিকছড়ি উপজেলার পৌনে এক লাখ মানুষের মূল পেশা কৃষি। এ প্রান্তিক কৃষকেরা সারা বছর উঁচু-নিচু টিলা ভূমিতে নানা মৌসুমি ফসল চাষে নির্ভরশীল। একই জমিতে বারবার চাষাবাদ করায় উর্বরাশক্তি দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। ফলন বাড়াতে এত দিন কৃষকেরা রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করলেও সম্প্রতি সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের ফলে অনেকেই জৈব ও ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার তৈরির ও ব্যবহার বেড়েছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ মো. ফরিদ জানান, উপজেলার প্রত্যন্ত জনপদে কৃষকেরা এক সময় অপরিকল্পিত চাষাবাদ করে লোকসানের বোঝা টানত। কালের আবর্তে কৃষিক্ষেত্রে আধুনিকতা ছোঁয়ায় আমরা এখন রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার কমিয়ে বিকল্প পদ্ধতিতে প্রান্তিক কৃষকদের লাভবান করতে কাজ করছি।
উপজেলার তৃণমূলেও প্রান্তিক কৃষক নর-নারীরা গৃহের (ঘরে) ব্যবহৃত শাক-সবজির অপ্রয়োজনীয় অংশ না ফেলে একটা নির্ধারিত জায়গা বা পরিকল্পিত পদ্ধতিতে তা সংরক্ষণ করে জৈব সার তৈরি এবং গৃহপালিত পশুর গো-মূত্র, গোবরে জীবন্ত কেঁচো চাষাবাদ দিয়ে তৈরি করছে ভার্মি কম্পোস্ট সার। যা ফসলে অবাধে প্রয়োগ করলে লাভ ছাড়া ক্ষতির কোন লক্ষণ নেই। এখন অধিকাংশ কৃষক জৈব সার বা ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করছে। এতে ফসল উৎপাদন ও তা বাজারজাতে ক্রেতাও আকৃষ্ট হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসিনুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, জমির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধিতে জৈব সার বা ভার্মি কম্পোস্ট সার ফসলে অভাবনীয় শক্তির জোগান দিচ্ছে। যা আগে প্রান্তিক কৃষকেরা জানত না। আমরা (কৃষিবিদরা) প্রান্তিক কৃষকদের কৃষি উৎপাদনে জৈব বা ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহার ও তৈরিতে প্রশিক্ষিত করছি। এ সার ব্যবহারে কৃষকেরা বেশ লাভবান হচ্ছে। এসব সার ব্যবহারে ফসলের রং, স্বাদ অতুলনীয়। বাজারে এসব ফসল কিনতে ভিড় জমায় ক্রেতারা।