গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় একটি কয়েল তৈরির কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বেলা পৌনে ১টার দিকে স্ট্যান্ডার্ড ফিনিক্স অয়েল কোং নামের কারখানায় এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিটের আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় বেলা ২টা ৫৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফায়ার সার্ভিস ও এলাকাবাসী জানায়, মুহূর্তের মধ্যে আগুন কারখানার বিভিন্ন ইউনিটে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের ধোঁয়ায় পুরো এলাকা কালো হয়ে যায়, যা অনেক দূর থেকেও দেখা যাচ্ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার দুপুরে বাঘের বাজার এলাকার ফিনিক্স কারখানায় হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এ সময় কারখানার নিরাপত্তাকর্মীরা দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে আগুনের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পেলে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন স্টেশনের ৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে।
কারখানার এজিএম (অপারেশন) সুজিত বিশ্বাস বলেন, ‘আগুন লাগার পরপরই আমাদের কারখানার লোকজন চেষ্টা করে। কিন্তু আগুনের তাপমাত্রা বেশি থাকায় সবাই পরে বের হয়ে যায়। এ ছাড়াও কারখানার সব শ্রমিক-কর্মকর্তাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। কারখানার তিনটি এরিয়াতে আগুন লেগেছে। সেখানে থাকা সব মালামাল পুড়ে গেছে।’
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মো. মামুন বলেন, স্ট্যান্ডার্ড ফিনিক্স অয়েল কোং কারখানায় লাগা আগুন প্রথম থেকেই বিশাল আকার ধারণ করে। এখানে কেমিক্যালের গুদাম আছে, উৎপাদিত পণ্য আছে। কেরোসিনসহ অনেক ধরনের কেমিক্যাল আছে। আগুন এত বেশি ছিল যে এটা আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। আমরা প্রফেশনালি চেষ্টা করেছি আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য।’ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। আগুন লাগার কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে বলে জানান তিনি।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক কাজী নাজমুজ্জামান বলেন, ‘কারখানায় মশার কেমিক্যাল তৈরি করা হয়। যেখানে কেরোসিনজাতীয় দ্রব্য থেকে ব্লিচিং পাউডারের বিক্রিয়া থেকে মশার এক প্রকার কেমিক্যাল তৈরি করা হয়, সেখানেই আগুন লাগে। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে কেরোসিনের মাধ্যমে আগুন মাঠে চলে আসে। মাঠ থেকে ফিলিশিং গুদাম এবং অ্যাডমিন সেকশনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সংবাদ পাওয়ার পরপরই রাজেন্দ্রপুর মডার্ন ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট কাজ শুরু করে। আগুনের ভয়াবহতা বাড়তে থাকায় আরও কয়েকটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আনা হয়। কারখানায় যে ধরনের অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকা দরকার, সেফটি প্ল্যান থাকা দরকার; তা ছিল না। কারখানায় ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স থাকলেও অব্যবস্থাপনার কারণে নবায়ন করা হয়নি।’