‘শ্রেষ্ঠত্বের উল্লাস, গর্বের পথ নেতৃত্ব ২০২৫’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্যাপিত হলো ২৮তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। ১৯৯৮ সালের এই দিনে ইনস্টিটিউট অব পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ ইন এগ্রিকালচার (ইপসা) থেকে দেশের ১৩তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে গাকৃবি।
দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় গাকৃবি টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) র্যাঙ্কিংসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আন্তর্জাতিক পর্যায়েও অর্জন করেছে গৌরবময় অবস্থান। আবার উরি র্যাঙ্কিং ২০২৫-এ জাতীয়ভাবে প্রথম হয়ে ‘ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশন’ ক্যাটাগরিতে বিশ্বের শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গাকৃবির অবস্থান ৭৭তম। সাম্প্রতিক কিউএস র্যাঙ্কিংয়ে দেশসেরা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের খেতাব অর্জন করেছে ২৮ বছরে পদার্পণকারী সেন্টার অব এক্সিলেন্সখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়টি। টানা তিন বছর ধরে ইউজিসির এপিএ মূল্যায়নেও হয়েছে প্রথম। অন্যদিকে গাকৃবির বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত ৯৩টি ফসলের উন্নত জাত এবং ২০টির বেশি কার্যকরী প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বাড়িয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে আজ সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের দিনব্যাপী কর্মসূচির শুরু হয়। প্রথমে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে বেলুন উড়িয়ে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধির কামনায় প্রতীকী বার্তা প্রেরণ করে দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন উপাচার্য। পরে ৩৬ জুলাই চত্বর থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মাঠকর্মীদের সমবেত অংশগ্রহণে এক বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ৩৬ জুলাই চত্বরে এসে শেষ হয়।
সেখানে দিবসের ওপর এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শরীফ রায়হানের পরিচালনায় বক্তব্য দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এম ময়নুল হক, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. সফিউল ইসলাম আফ্রাদ এবং রেজিস্ট্রার মো. আবদুল্লাহ্ মৃধা।
এ সময় উপাচার্য বলেন, গাকৃবি এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে। ২৮ বছরের পথচলায় আমরা অর্জনের যে দৃঢ় ভিত্তি গড়ে তুলেছি, তা শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং আমাদের সম্মানিত গবেষকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। আজকের এই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় আমরা দায়িত্ববান, আমরা সম্ভাবনাময় এবং আমরা বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তা, কৃষি উদ্ভাবন ও টেকসই উন্নয়নের ভবিষ্যৎ নির্মাতা। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, গাকৃবি আগামী দিনে দেশের কৃষি-শিক্ষায় একটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড স্থাপন করবে। সবার প্রতি আমার আহ্বান আমরা সবাই মিলে একটি মানবিক, গবেষণাবান্ধব ও আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলব।
অন্যদিকে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিতব্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসের উদ্যাপন পরিণত হয় আরও বর্ণিল ও প্রাণবন্ত উৎসবে।