হোম > সারা দেশ > গাজীপুর

দখল-দূষণে মৃতপ্রায় চিংড়ি খাল উদ্ধার চায় স্থানীয়রা

রাতুল মণ্ডল, (শ্রীপুর) গাজীপুর

শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ও মাওনা ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেঁষে প্রবাহিত ছিল স্বচ্ছ জলের খাল ‘চিংড়ি’। চার কিলোমিটার দীর্ঘ এ খালের বেশির ভাগ অংশ এখন ফসলের জমি। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ও মাওনা ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেঁষে প্রবাহিত ছিল স্বচ্ছ জলের খাল ‘চিংড়ি’। চার কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালের অস্তিত্ব এখন শুধুই ইতিহাসের পাতায়। একসময় চিংড়ি মাছের প্রাচুর্যের কারণে পরিচিতি পাওয়া এই খালের দৃশ্যমান অংশ এখন মাত্র ৫০০ মিটার। বাকি অংশ দখল ও ভরাট করে রূপান্তর করা হয়েছে ফসলি জমিতে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গাজীপুর ইউনিয়নের কপাটিয়াপাড়া, নিজমাওনা, আক্তাপাড়া ও মাওনা ইউনিয়নের বদনীভাঙ্গা গ্রামের বুকচিরে প্রবাহিত খালটি সালদহ নদীতে গিয়ে মিশেছে। তবে বর্তমানে শুধু চিংড়ি ব্রিজ-সংলগ্ন ৫০০ মিটার অংশই খালের আকারে রয়ে গেছে। বাকি অংশে যত দূর চোখ যায়, শুধুই সবুজ ফসলের মাঠ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন ধরে খালটি দখল করে আসছে। দখলের কারণে একদিকে যেমন পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে, তেমনি কৃষি উৎপাদনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

নিজমাওনা গ্রামের বৃদ্ধ সরাফত আলী বলেন, ‘ছেলেবেলায় বাবার সঙ্গে চিংড়ি খালে মাছ ধরতে যেতাম। খালের পানি এতটাই স্বচ্ছ ছিল যে, অনেকে তা পান করত। এখন খালের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।’

আরেক বাসিন্দা আইনুদ্দিন ফকির জানান, ‘১৯৮৫-৮৬ সালের দিকে প্রভাবশালীরা দখল শুরু করে চিংড়ি খাল। এখন খাল নেই, মাছ নেই, বর্ষায় জলাবদ্ধতা হয়।’

শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ও মাওনা ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেঁষে প্রবাহিত ছিল স্বচ্ছ জলের খাল ‘চিংড়ি’। চার কিলোমিটার দীর্ঘ এ খালের বেশির ভাগ অংশ এখন ফসলের জমি। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্থানীয় নারী রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘আমার বাবা খাল থেকে মাছ ধরে আনতেন, আমাকেও সঙ্গে নিতেন। ছোটবেলায় আমরা খালেই গোসল করতাম। এখনো যেটুকু অংশ আছে, সেখানে পানি এখনো স্বচ্ছ।’

জলাবদ্ধতার বিষয়টি নিশ্চিত করেন খালপাড়ের বাসিন্দা জসিমউদ্দিনও। তিনি বলেন, ‘খাল ভরাটের কারণে অতিবৃষ্টিতে বসতবাড়ি তলিয়ে যায়। প্রশাসনের উচিত দ্রুত খাল উদ্ধার করা।’

নানিয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, ‘দুই বছর আগে মাপজোখ করে লাল নিশান টানানো হয়েছিল। তখন আশা জেগেছিল। কিন্তু অগ্রগতি থেমে আছে। খাল উদ্ধার হলে কৃষিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ত।’

‘নদী পরিব্রাজক দল’ শ্রীপুর শাখার সভাপতি সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‘চিংড়ি খাল একসময় ছিল স্বচ্ছ ধারার জলাধার। এখানকার কৃষি ও মৎস্য উৎপাদনের অন্যতম উৎস ছিল এটি। দখল-দূষণ প্রতিহত করে খালটি রক্ষা করতে হবে। দ্রুত দখল উচ্ছেদের দাবি জানাচ্ছি।’

শ্রীপুর উপজেলা ভূমি সার্ভেয়ার মো. মামুনুর রশীদ জানান, ‘চিংড়ি খালের মোট আয়তন ১১ একর ২ শতাংশ। এর বেশির ভাগ অংশ জবরদখল করে ফসলি জমি বানানো হয়েছে। তবে দুই বছর আগে সীমানা নির্ধারণ করে লাল নিশান টানানো হয়েছে।’

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজীব আহমেদ বলেন, ‘নদী ও খাল উদ্ধার নিয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। চিংড়ি খাল দখলদারদের তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে। তালিকা প্রকাশ করে উদ্ধার অভিযান শুরু হবে।’

কাশিমপুর কারাগার থেকে ২৫ বছর পর মুক্তি পেলেন পাকিস্তানি রইস খান

শ্রীপুরে মধ্যরাতে বসতবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে ৯টি কক্ষ পুড়ে ছাই

কালিয়াকৈরে দুই দিনে পোশাক কারখানার তিন শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ, বন্ধ ঘোষণা

গাজীপুরের শ্রীপুর: দখলের কবলে সুতিয়া মোহনা-চরে প্রাচীর

তুরাগতীরে মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো জোড় ইজতেমা

কালিয়াকৈরে অগ্নিকাণ্ডে ৮০ কক্ষ পুড়ে ছাই

পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে শ্রমিককে হত্যা, গ্রেপ্তার ১

‎টঙ্গীতে ‌আতঙ্কে ফের অর্ধশতাধিক পোশাককর্মী অসুস্থ

শ্রীপুরে টিকিট কেটে কমলাবাগান দেখতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়

শ্রীপুরে ট্রাকচাপায় কিশোর নিহত