গাজীপুরের শ্রীপুরে কুড়ানো তাল নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে কমলা বেগমের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন মো. আশিক মিয়া। এতে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলা কমলাকে পরে কোদাল দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঝোপে লাশ পুঁতে ফেলেন। কয়েক ঘণ্টা পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাশ উদ্ধারের পর উৎসুক জনতা সেজে তা আবার দেখতে যান তিনি।
আশিক (২৬) আজ শনিবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার সময় উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে হত্যাকাণ্ডের এমন বর্ণনা দেন। দুপুরে গাজীপুর ইউনিয়নের ভুতুলিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কোদাল, হাতুড়ি জব্দ করে পুলিশ।
আশিক ভুতুলিয়া গ্রামের মো. আব্দুল হামিদের ছেলে। নিহত কমলা (৫০) একই গ্রামের মো. কদম আলীর স্ত্রী। গতকাল শুক্রবার সকালে তাল কুড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হয় কমলা। এরপর মাটি খুঁড়ে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে মামলা করেন কদম আলী। এতে আশিককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
অভিযুক্ত আশিক জানান, তিনি কোদাল-হাতুড়ি নিয়ে প্রতিদিনের মতো শুক্রবার ভোররাতে ইট ভাঙার কাজ করতে রাস্তায় বের হন। এ সময় রাস্তার পাশে কয়েকটি পাকা তাল গাছ থেকে পড়েছিল। তিনি তালগুলো জমা করে এক জায়গায় রাখেন। পরে কমলা এসে সেগুলো নিয়ে যেতে চাইলে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় আশিক উত্তেজিত হয়ে কমলাকে সজোরে চড়থাপ্পড় মারেন এবং হাতে থাকা হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে সংজ্ঞাহীন কমলার মুখে প্রস্রাব করে দেন আশিক। সেই সঙ্গে কোদাল দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এরপর পাশের ঝোপে গর্ত খুঁড়ে ওই নারীকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে মাটি চাপা দেন।
মুখে প্রস্রাব কেন করলেন—এমন প্রশ্নের জবাব আশিক বলেন, ‘কমলার মুখ অনেক খারাপ, ভাষা খারাপ। এ জন্য মুখে প্রস্রাব করছি।’
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডটি খুবই স্পর্শকাতর। স্থানীয় এক নারীর দেওয়া তথ্যমতে খুনিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। মধ্যবয়সী ওই নারী পুলিশকে জানায়, সকালে অভিযুক্তের হাতে কোদাল দেখেছে। এই সন্দেহ থেকেই পুলিশ কাজ করে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কোদাল, হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।’