হোম > সারা দেশ > গাইবান্ধা

ভাসানী সেতুর স্বপ্নযাত্রা শুরু

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত সেতুর উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের জনপদে যুগান্তকারী যোগাযোগ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নিয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও কুড়িগ্রামের চিলমারীর মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী ‘মাওলানা ভাসানী’ সেতুর স্বপ্নযাত্রা শুরু হলো। আজ বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে সুন্দরগঞ্জের তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত এ সেতুর উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

উদ্বোধনের পর মুনাজাত করেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মুফতি মো. ওমর ফারুক। এরপর সুন্দরগঞ্জের হরিপুর প্রবেশমুখে ফিতা কেটে সেতুর দ্বার খুলে দেওয়া হয়। এ সময় উৎসুক জনতার ভিড় সামাল দিতে বেশ বেগ পেতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। ঘটনাস্থলে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এলজিইডির কর্মকর্তা, সেতু নির্মাণসংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ উপদেষ্টার সফরসঙ্গীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে উদ্বোধনের আগে থেকে সেতু এলাকাজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। ভোর থেকে তিস্তাপাড়ে ভিড় জমাতে থাকেন দুই জেলার শত শত দর্শনার্থী ও সুন্দরগঞ্জ-চিলমারী উপজেলার হাজারো সাধারণ মানুষ। কেউ পরিবারের সঙ্গে, কেউবা দল বেঁধে আসেন ঐতিহাসিক এ মুহূর্তের সাক্ষী হতে। দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে—এই আনন্দে তাঁদের চোখেমুখে ফুটে ওঠে উচ্ছ্বাস আর গর্বের আলো।

সুন্দরগঞ্জের হরিপুর প্রবেশমুখে ফিতা কেটে সেতুর দ্বার খুলে দেওয়া হয়। ছবি : আজকের পত্রিকা

এর আগে ১০ আগস্ট স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ সেতুটির নামকরণসংক্রান্ত সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেখানে বলা হয়, ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ এই পিসি গার্ডার সেতুটি হবে ‘মাওলানা ভাসানী সেতু, গাইবান্ধা’।

২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। নানা জটিলতা ও একাধিকবার তারিখ পরিবর্তনের পর অবশেষে ১১ বছর পর চালু হলো সেতুটি।

এলজিইডি সূত্র জানায়, সৌদি সরকারের অর্থায়নে ও চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে সেতুটি নির্মিত হয়েছে। প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৮৮৫ কোটি টাকা।

১৪৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯.৬ মিটার প্রস্থের পিসি গার্ডার সেতুটি দেশের ইতিহাসে এলজিইডির সবচেয়ে বড় প্রকল্প। সেতুকে ঘিরে তৈরি হয়েছে প্রায় ৮০ কিলোমিটার অ্যাকসেস সড়ক। এর মধ্যে নির্মিত হয়েছে ৫৮টি বক্স কালভার্ট ও ৯টি আরসিসি সেতু।

ফলে বেলকা বাজার, পাঁচপীর, ধর্মপুর, হাট লক্ষ্মীপুর, সাদুল্যাপুর, ধাপেরহাটসহ অন্তত ১০টি বাজার সরাসরি সংযুক্ত হবে।

উৎসুক জনতার ভিড় সামাল দিতে বেশ বেগ পেতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। ছবি : আজকের পত্রিকা

সেতুটি চালু হওয়ায় গাইবান্ধা–কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রায় আসবে বড় পরিবর্তন। স্বল্প খরচে কৃষি ও শিল্পপণ্যের পরিবহন সম্ভব হবে। গড়ে উঠবে ছোট-মাঝারি শিল্পকারখানা।

ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হওয়ার পাশাপাশি ভূরুঙ্গামারী স্থলবন্দরের দূরত্ব কমবে ৪০–১০০ কিলোমিটার। পর্যটনেও নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে।

তবে সেতুর নামকরণ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে রয়েছে ক্ষোভ। কারণ, মুক্তিযোদ্ধা ও সেতুর স্বপ্নদ্রষ্টা শরিতুল্যাহ মাস্টারের নামে নামকরণের দাবি জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা একাধিকবার মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েছেন।

তাঁদের দাবি, ১৯৯৫ সাল থেকে শরিতুল্যাহ মাস্টার আন্দোলন চালিয়ে ‘তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন কমিটি’ গঠন করেছিলেন। তাঁর নিরলস প্রচেষ্টাতে সেতুটি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। তাই তাঁর স্মৃতি অম্লান রাখতে ‘শরিতুল্যাহ মাস্টার তিস্তা সেতু’ করার দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী।

তবে সরকার ১০ আগস্ট প্রজ্ঞাপন জারি করে সেতুর নামকরণ করেছে ‘মাওলানা ভাসানী সেতু, গাইবান্ধা’।

সব বিতর্ক ছাপিয়ে দুই পাড়ের মানুষ এখন উচ্ছ্বসিত। দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণে আজ থেকে শুরু হলো তাঁদের নতুন যাত্রা।

আমাদের লক্ষ্য কাউকে শিবির বানানো নয়, ভালো মানুষ তৈরি করা: জাহিদুল ইসলাম

চা-দোকানিকে কুপিয়ে হত্যা, বাড়ির পাশের ভিটায় মিলল মরদেহ

ভাগ্যবদলের স্বপ্নে ছুটছেন গাইবান্ধার চরাঞ্চলের নারীরা

গাইবান্ধায় অটোরিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, পুলিশ সদস্য নিহত

ফুলছড়িতে শিয়ালের কামড়ে নারী-শিশুসহ আহত ১০

গাইবান্ধার ৫টি আসন: দুর্গ দখলে মরিয়া দুই দল

সুন্দরগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত

ঘাঘট নদের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু: ২০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ

সুন্দরগঞ্জে নাশকতার মামলায় প্রধান শিক্ষকসহ গ্রেপ্তার ২

দাম্পত্য কলহ, স্ত্রীর পায়ের রগ কেটে দিলেন স্বামী