হোম > সারা দেশ > গাইবান্ধা

সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুর ওপর উঠতে হয় বাঁশ দিয়ে

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা

সংযোগ সড়ক ছাড়া সেতু নির্মাণ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে দুর্ভোগে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ হলেও দুই পাশে নির্মাণ করা হয়নি সংযোগ সড়ক। ফলে বাঁশের সাঁকো দিয়ে সেতুটিকে কোনোরকমে ব্যবহার উপযোগী করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। এই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই এখন যাতায়াত করে হাজারো মানুষ। মাঝেমধ্যে পা পিছলে দুর্ঘটনাও ঘটে। এতে চরম ক্ষোভে ফুঁসছে সেতু ব্যবহারকারীরা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক নির্মাণ হয়নি। এ জন্য ঠিকাদার ও তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের উদাসীনতা ও অবহেলাকেই দায়ী করছেন তাঁরা।

সুন্দরগঞ্জ পিআইও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের এই সেতু নির্মাণে বরাদ্দ হয় ৩৪ লাখ টাকা। চুক্তি অনুযায়ী কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের জুনে। কিন্তু বাস্তবে নির্মাণকাজ শেষ হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে। এর মধ্যেই বরাদ্দের প্রায় ২৬ লাখ টাকা তুলে নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

অভিযোগ উঠেছে, টেন্ডারে কাজ পেলেও প্রকৃতপক্ষে আইকন কনস্ট্রাকশনের পরিবর্তে স্থানীয় ঠিকাদার গোলাম মওলাই কাজটি সম্পন্ন করেন। কিন্তু সংযোগ সড়ক না করেই প্রকল্প গুটিয়ে নেওয়া হয়।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, সেতুর দুই প্রান্তে গভীর গর্ত। বাধ্য হয়ে স্থানীয়রা বাঁশের সাঁকো বসিয়ে অস্থায়ী পথ তৈরি করেছেন। কিন্তু সেটিও এখন নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। যানবাহন তো দূরের কথা, হেঁটেও পারাপার কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এতে শিশু ও বয়স্কদের চলাফেরা করা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। আর রোগী নিয়ে যাওয়ার তো কোনো সুযোগই নেই। দিনের পর দিন এভাবে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

ঘগোয়া গ্রামের ব্যবসায়ী মশিউর রহমান বলেন, ‘তড়িঘড়ি করে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। সংযোগ সড়ক না থাকায় এটি মূলত অকেজো।’ 

সেতুর পাশের বাসিন্দা অমল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘মানুষের সুবিধার বদলে সেতুটি এখন দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।’ 

শিক্ষার্থী রাফিউর রহমান ও আইরিন আক্তার বলেন, ‘নিজেরা হেঁটে কোনোভাবে গেলেও যানবাহন চলাচল করতে পারে না। ভয়ে ভয়ে পা ফেলতে হয়।’ 

ইউপি সদস্য মজনু মিয়া বলেন, ‘সংযোগ সড়ক না থাকায় গ্রামবাসী মিলে বাঁশের সাঁকো বসিয়েছে। বহুবার বলার পরও ঠিকাদার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

তারাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সেতু নির্মাণ শেষে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাউকে পাওয়া যায়নি। মানুষের দুর্ভোগের জন্য ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষের অবহেলাই দায়ী। দ্রুত বিষয়টি সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।’

সংযোগ সড়ক ছাড়া সেতু নির্মাণ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে দুর্ভোগে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ বিষয়ে আইকন কনস্ট্রাকশনের প্রোপ্রাইটর শামীম বলেন, ‘কাজটি মূলত পার্টনার হিসেবে গোলাম মওলা করেছেন। সংযোগ সড়ক হয়নি বিষয়টি সম্প্রতি জেনেছি। দ্রুত মাটি দিয়ে সংযোগ সড়ক তৈরি করা হবে।’

তবে এ বিষয়ে উপজেলা পিআইও মশিয়ার রহমানের সঙ্গে অফিসে কথা বলতে চাইলে তিনি সেতু প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য নেই, আপনারা ইউএনওর কাছ থেকে বক্তব্য নিন।’ এরপর তিনি আর কোনো তথ্য না দিয়েই দ্রুত অফিস ত্যাগ করে বাসায় চলে যান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জাসদের কেন্দ্রীয় নেতাকে এনসিপির আহ্বায়ক করায় সদস্যসচিবের পদত্যাগ

জামায়াত নেতাকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে

গাইবান্ধায় এনসিপির আহ্বায়ক হলেন জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা

আমাদের লক্ষ্য কাউকে শিবির বানানো নয়, ভালো মানুষ তৈরি করা: জাহিদুল ইসলাম

চা-দোকানিকে কুপিয়ে হত্যা, বাড়ির পাশের ভিটায় মিলল মরদেহ

ভাগ্যবদলের স্বপ্নে ছুটছেন গাইবান্ধার চরাঞ্চলের নারীরা

গাইবান্ধায় অটোরিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, পুলিশ সদস্য নিহত

ফুলছড়িতে শিয়ালের কামড়ে নারী-শিশুসহ আহত ১০

গাইবান্ধার ৫টি আসন: দুর্গ দখলে মরিয়া দুই দল

সুন্দরগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত