মাদক কেনার টাকা জোগাতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সহকর্মীকে হত্যা করে ব্যাটারিচালিত রিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মূল আসামিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ফরিদপুর সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের বাছের মোল্যা ডাঙ্গী এলাকার মৃত ফিরোজ খানের ছেলে রাজিব খান (৪১) ও শহরতলির বায়তুল আমান এলাকার মানিক হাওলাদারের ছেলে মো. মান্নান হাওলাদার (৩২)।
আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আজমীর হোসেন। তিনি বলেন, রাজিব খান তাঁর সহকর্মী টিপু শেখকে (৪০) নেশাগ্রস্ত করে হত্যা করেন এবং ছিনতাই করা রিকশাটি মান্নান হাওলাদারের কাছে বিক্রি করেন। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে ছিনতাই হওয়া রিকশা ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ১৮ ডিসেম্বর সকালে সদর উপজেলার ঈশানগোপালপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর এলাকার একটি কলাবাগান থেকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা মরদেহটি শহরতলির রঘুনন্দপুর এলাকার রিকশাচালক ও ইটভাটার শ্রমিক টিপু শেখের বলে শনাক্ত করেন। এই ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ভাই সিদ্দিক শেখ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজমীর হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলের কাছেই নিহত ব্যক্তির ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ফোনটির কললিস্ট ও অবস্থান বিশ্লেষণ এবং সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে রাজিব খানকে শনাক্ত করা হয়। পরে ২০ ডিসেম্বর ভোররাতে শহরতলির সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকার মজিবুর রহমানের ইটভাটা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজমীর হোসেন আরও বলেন, আদালতে রাজিব খানের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তাঁর দেওয়া তথ্যে ছিনতাই হওয়া রিকশাটি উদ্ধার করা হয় এবং ক্রেতা মান্নান হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, নিহত টিপু শেখ ও রাজিব খান একই ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। পাশাপাশি টিপু শেখ রিকশা চালাতেন। রাজিব খান মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং মাদক সংগ্রহের নামে বিভিন্ন খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে টাকা নিতেন। পরে সেই টাকা খরচ করে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ঋণদাতাদের চাপ ও মাদক কেনার অর্থ জোগাড়ের উদ্দেশ্যে তিনি টিপু শেখকে হত্যা করে রিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক হিরামন বিশ্বাসসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।