বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় আওয়ামী লীগের দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আধা ঘণ্টাব্যাপী পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার পরপরই ঢাকা-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের মরুরা এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়া হয়।
জানা যায়, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সকালে উপজেলা প্রশাসন ও দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিজয় র্যালি শেষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনের সাংসদ সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ। পরে তিনি পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে কুচকাওয়াজে অংশ নেন। এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোজলিন শহীদ চৌধুরী, পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সারোয়ার জাহানসহ উপজেলা প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সাবেক সাংসদ অ্যাডভোকেট মো. সোহরাব উদ্দিন দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে যান। এ সময় সাংসদ নূর মোহাম্মদ-সমর্থিত নেতা-কর্মীরা তাঁদের বাধা দেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। এর মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মো. সোহরাব উদ্দিনসহ নেতা-কর্মীরা। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ইটপাটকেলের আঘাতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। এ সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে ঘটনার কিছুক্ষণ পর ঢাকা-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের মরুরা এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাসে কে বা কারা অগ্নিসংযোগ করে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ব্যাপারে সাংসদ নূর মোহাম্মদ-সমর্থিত জেলা শ্রমিক লীগের উপদেষ্টা আতাউল্লাহ সিদ্দিক মাসুদ বলেন, ‘সাংসদ নূর মোহাম্মদ বাধা দেওয়ার পক্ষে নন। সোহরাব উদ্দিন তাঁর লোকজনসহ দেশীয় অস্ত্রপাতি নিয়ে ফুল দিতে আসেন। এ সময় তাঁরা নূর মোহাম্মদ-সমর্থিত ছাত্রলীগের নেতা সাকিবুল হাসান মুন্নার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মকছুদ মিয়াকে মারধর করেন। এতে দলীয় নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও সাবেক সাংসদ মো. সোহরাব উদ্দিনের নেতৃত্বে আমরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে গেলে তাঁরা আমাদের বাধা দেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে আমাদের দু-তিনজন নেতা-কর্মী আহত হন।’
এ ব্যাপারে পাকুন্দিয়া থানার ওসি মো. সারোয়ার জাহান বলেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে দুই রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।