নরসিংদীতে সাউথইস্ট ব্যাংকের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশ ও জালিয়াতির মাধ্যমে ২৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ঋণ দেখিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা গাজীপুরের সহকারী পরিচালক মো. সেলিম মিয়া মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আসামিরা হলেন নরসিংদী সাউথইস্ট ব্যাংকের অফিসার খান মোহাম্মদ খালেদ রউফ ও একই ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
বাদী সহকারী পরিচালক মো. সেলিম মিয়া বলেন, ‘ওই দুই অফিসার প্রতারণা, জাল জালিয়াতিসহ ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাতটি জাল ওডি ঋণ হিসাব খুলে ২৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ দেখিয়ে নিজেরাই ঋণগ্রহীতা সেজে টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছেন। দীর্ঘ তদন্তে অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
মামলা সূত্রে জানা যায়, খান মোহাম্মদ খালেদ রউফ নরসিংদী শাখা থেকে জালিয়াতিপূর্বক ওডি হিসাব খুলে ২৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। তিনি ব্যাংকিং সিস্টেমে ২০১৭ সালের ২৭ জুলাই জনৈক আবেদা সুলতানা তিন লাখ টাকার একটি ওডি ঋণ হিসাব খোলেন। পরে ওডি হিসাব খোলার যাবতীয় ডকুমেন্টের কোনো কিছুই খুঁজে পাওয়া যায়নি। ওই হিসাব থেকে বিভিন্ন তারিখে ২ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ টাকা মো. কামরুলের নামে ভুয়া সঞ্চয়ী হিসাব নম্বরে স্থানান্তর করা হয়।
একইভাবে শাখার কোর ব্যাংকিং সিস্টেমে ২০১৭ সালের বিভিন্ন তারিখে আশা রানী সাহার নামে তিন লাখ টাকা, বিথি রায়ের নামে তিন লাখ টাকা, নারায়ণ চন্দ্রের নামে তিন লাখ টাকা, আবু হানিফের নামে চার লাখ টাকার চারটি ওডি ঋণ হিসাব খুললেও কোনো ঋণ ফাইল শাখায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। একইভাবে তাঁদের নামে আরও পাঁচটি ওডি ঋণ হিসাব খুলে ব্যাংকের উল্লেখিত টাকা আত্মসাৎ করেন।
২০১৬ থেকে ২০১৮ সালে করা এ জালিয়াতির বিষয়ে এর আগে দুদকে অভিযোগ করেন সুমা আক্তার নামের সাউথইস্ট ব্যাংকের একজন গ্রাহক। তাঁর অভিযোগ, তার পেনশন ডিপোজিট স্কিম লিয়েন রেখে মোহাম্মদ তানভীরকে ঋণ প্রদানের নামে কোনো অথরিটি তিনি শাখাকে দেননি। এভাবেই জালিয়াতি করে উল্লেখিত টাকা আত্মসাৎ করেন ওই দুই ব্যাংক কর্মকর্তা। তদন্তে একইভাবে আরও অনেকের নামে জালিয়াতি ও প্রতারণা করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পায় দুদক।