অমর একুশে বইমেলায় বর্ধিত সময়ে এসে তৃতীয় দিনের মতো উদ্যাপিত হচ্ছে শিশুপ্রহর। বাবা-মায়ের হাত ধরে আসা শিশুদের পদচারণায় মেলার শিশু চত্বর যেন পরিণত হয়েছে কচি-কাঁচার মেলায়। মায়ের হাত ছেড়ে রঙিন মলাটের বইয়ের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ছে কেউ কেউ। আবার সমবয়সী অন্য শিশুকে দেখে আনন্দে চিৎকার দিয়ে উঠছে। কখনো বা পছন্দের বই কিনে না দেওয়ায় জেদ করে কান্নায় ভেঙে পড়ছে কোনো শিশু। সিসিমপুরের হালুম, ইকরি, শিকু ও টুনটুনির পরিবেশনা শিশুদের আনন্দে যুক্ত করেছে আলাদা মাত্রা।
আজ শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অমর একুশে বইমেলার মূল আকর্ষণ ছিল শিশু চত্বর। ছুটির দিন হিসেবে খুব বেশি ভিড় না থাকলেও শিশুদের আগমনে এই মেলা প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
মা ও ফুফুর সঙ্গে বই কিনতে মেলায় এসেছে সামান্থা জোয়ারদার। চার বছর বয়সী এই খুদে পাঠক ঠাকুমার ঝুলি, আঁকার বই ও নীতিকথামূলক বই কিনেছে। তারপর চোখ আটকে গেছে পপআপ বইয়ের ওপর। বায়না ধরায় সেটাও কিনে দেওয়ার জন্য ফুল, পাখি, গাছ আর মাছ নিয়ে বিশেষভাবে প্রস্তুত করা বইগুলো বাছাই করছিলেন তার ফুফু অনামিকা জোয়ারদার। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওর বইয়ের প্রতি প্রচুর আগ্রহ। ওর আগ্রহেই মেলায় আসা। যে বইটাই পছন্দ হচ্ছে, সেটা খুলেই স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে পড়তে শুরু করে দিচ্ছে। চারটা বই কেনার পরে এখন তার বায়না পপআপ বই কিনে দিতে হবে।’
এদিকে সিসিমপুরের আয়োজনে শিশু চত্বরের রমনা কালীমন্দির প্রান্তে সিসিমপুর ইকরি, হালুম, টুকটুকি ও শিকুদের পরিবেশনায় মজেছে খুদে পাঠকেরা।
প্রতিবারই বইমেলা শুরু হওয়ার পরে সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার আয়োজন করা হয় শিশু প্রহর। এই দুই দিন করোনা মহামারির কারণে বইমেলার প্রথম সপ্তাহে শিশু প্রহরের আয়োজন করা হয়নি। তবে দ্বিতীয় সপ্তাহে থেকে ফের শুরু হয় এই আয়োজন। এতে খুশি হয়ে মেলা আয়োজক কমিটিকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন অভিভাবকেরা। আলাদা দিন, সময় বা উপলক্ষ হলে শিশুদের বইমুখী করা সহজ হয় বলেও জানান তাঁরা।