১১৬ জন আলেম ও ১ হাজার মাদ্রাসার বিরুদ্ধে দুদকে জমা দেওয়া গণকমিশনের শ্বেতপত্রের প্রতিবাদে আগামী ২ জুন ওলামা সম্মেলন করবে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ। ২৮ মে এই শ্বেতপত্রের বিষয়ে নাগরিক মতবিনিময় সভাও করবে তারা।
আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচির কথা জানায় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ। সংবাদ সম্মেলনে গণকমিশনের কার্যক্রমের তদন্ত এবং ওয়াজ মাহফিলকে প্রশাসনিক বিধিনিষেধের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানানো হয় ৷ একই সঙ্গে কারাবন্দী সব আলেমের মুক্তি এবং তাঁদের বিরুদ্ধে হওয়া সব মামলার প্রত্যাহার চাওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি নুরুল হুদা ফয়েজী বলেন, দেশে আইন আদালত থাকতে দুদকে গণকমিশনের প্রতিবেদন দেওয়ার কোনো এখতিয়ার নাই। কথিত শ্বেতপত্রে প্রধানত উলামাদের লক্ষ্য বানানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
গত বছর সাম্প্রদায়িক হামলা ও ধর্মীয় উন্মাদনার তদন্তে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং জাতীয় সংসদের আদিবাসী ও সংখ্যালঘুবিষয়ক ককাসের যৌথ উদ্যোগে ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন’ গঠন করা হয়। সম্প্রতি তারা ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ২০০০ দিন’ শীর্ষক শ্বেতপত্র প্রকাশ করে। শ্বেতপত্রে ১১৬ জন আলেম ও ১ হাজার মাদ্রাসার বিরুদ্ধে জঙ্গি অর্থায়ন ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অভিযোগ এনে তা দুদকে জমা দেওয়া হয়।
ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ বলছে, গণকমিশন সারবত্তাহীন অভিযোগপত্রের মাধ্যমে নাগরিকদের মাঝে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ওয়াজ বাংলাদেশের হাজার বছরের সংস্কৃতি। এটা বাঙালি মুসলিমদের ঐতিহ্য। ওয়াজের মাধ্যমে গ্রামে গঞ্জে ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে, সমাজবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এই ওয়াজের বিরুদ্ধে যারা শ্বেতপত্র তৈরি করেছে তারা মুসলিম বাঙালি সংস্কৃতির বিরুদ্ধের শক্তি বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। তাঁরা বলেন, গণকমিশন মুসলমানদের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বাইরে থেকে আমদানি করা সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়ার ঘৃণ্য চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে৷
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নুরুল হুদা ফয়েজী জানান, গণকমিশনের তালিকায় যেই ১১৬ জনের নাম এসেছে তাঁদের সবার পক্ষে এই সম্মেলন।
ওলামা মাশায়েখরা মনে করছেন, আলেমদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গণকমিশন তাদের হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে ৷ এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ, সারা দেশের আলেম ও মাদ্রাসার বিরুদ্ধে সকল প্রকার হয়রানি বন্ধ, ধর্মীয়-রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে সম্মানীয় ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে মানহানিকর শব্দ ব্যবহার নিষিদ্ধে আইনসহ ৮ দফা দাবি জানানো হয় ৷