মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস ও তাঁর স্ত্রী নীলিমা দাসের ফ্ল্যাট, প্লট, জমি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাঁদের দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এসব নির্দেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এসব নির্দেশ দেন বলে জানান দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম। মৃণাল ও তাঁর স্ত্রীর স্থাবর সম্পদ ক্রোক, অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে পৃথক পৃথক আবেদন করেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জুলফিকার।
আবেদন অনুযায়ী, মৃণালের ধানমন্ডির একটি ফ্ল্যাট, পূর্বাচলের সাড়ে ৭ কাঠার একটি প্লট ও ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। তাঁর একটি গাড়ি জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব স্থাবর সম্পদের মোট মূল্য ১৪ কোটি ৮০ লাখ ৪৫ হাজার ২৮০ টাকা। এছাড়া তাঁর নামে থাকা তিনটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। নয়টি ব্যাংক হিসাবে মৃণালের ৯৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা রয়েছে। তাঁর প্লট এবং ফ্ল্যাটের মূল্য ধরা হয়েছে ৩৮ লাখ ৪৪ হাজার ২৩০ টাকা।
একই সঙ্গে তাঁর স্ত্রী নীলিমা দাসের মোহাম্মদপুরের একটি ফ্ল্যাট, যার মূল্য ৩২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ক্রোক এবং ৩০টি ব্যাংক হিসাবের ১০ লাখ ৬১ হাজার ৮১৪ টাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
আবেদনে বলা হয়েছে, মৃণাল কান্তি তাঁর দায়িত্বে থেকে অসৎ উদ্দেশ্যে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১ কোটি ৫৫ লাখ ১৭ হাজার ২৩০ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রয়েছেন। তাঁর নামের ৮টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে মোট ২ কোটি ৪০ লাখ ৯৯ হাজার ৯০৬ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এ ঘটনায় দুদক মামলা করেছে।
নীলিমা দাসের আবেদনে বলা হয়েছে, নীলিমা ও মৃণাল অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে অসাধু উপায়ে এবং জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১ কোটি ৪৫ লাখ ২৮ হাজার ৬৪১ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন ও ভোগ দখলে রেখেছেন। নীলিমা ২০টি ব্যাংক হিসাবে ১৬ কোটি ১৯ লাখ ২৭ হাজার ৬৪১ টাকা অবৈধ লেনদেন করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে দায়ের করা ভিন্ন ভিন্ন মামলার তদন্তকালে তথ্য পাওয়া যায়, তাঁরা অসাধু উপায়ে অর্জিত সম্পদ অন্যত্র বিক্রয় বা হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার প্রচেষ্টায় রয়েছেন। দেশ ছেড়ে পালানোরও চেষ্টা করছেন। এ কারণে তাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন ও তাঁদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করার নির্দেশ প্রয়োজন।