হবিগঞ্জের ধর্ষণ মামলার আসামির খালাসের রায় বাতিল করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ধর্ষণের ঘটনায় জন্ম নেওয়া শিশুর ভরণপোষণের ব্যয়ভার বহনেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আসামিকে।
বিচারিক আদালতের রায় বাতিল চেয়ে বাদীর (ভুক্তভোগী) করা আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের বেঞ্চ এ রায় দেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শরীফুজ্জামান মজুমদার। আবেদনকারী ভুক্তভোগীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আমিনুল ইসলাম। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আক্তারুজ্জামান।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, বিয়ের কথা বলে ভুক্তভোগীকে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের টিলাগাঁও এলাকার ছিদ্দিক আলীর ছেলে কাছুম আলী ধর্ষণ করেন। তবে গর্ভধারণের পর কাছুম আলী তাঁকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন। এরপর ২০০৬ সালের ২১ জুলাই কাছুম আলীর বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী। ওই মামলায় একই বছরের ৩১ অক্টোবর চার্জশিট দেয় পুলিশ।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আপসের কথা বলে আসামিপক্ষ আদালতকে বিভ্রান্ত করে খালাসের রায় নেয়। তবে পরবর্তীতে আপস করেনি। এমনকি জন্ম নেওয়া শিশুরও কোনো খোঁজ নেয়নি। এরপর ভুক্তভোগী রায়ের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৬১-ক ধারায় হাইকোর্টে আবেদন করেন। ওই আবেদনের পর হাইকোর্ট ২০২১ সালের ৩০ মে রুল জারি করেন। মঙ্গলবার সেই রুল মঞ্জুর করে রায় দেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরও বলেন, সাধারণত আসামিপক্ষ মামলা বাতিলের জন্য হাইকোর্টে আসেন ৫৬১-ক ধারায়। আর হাইকোর্টও মামলাটি পুনরায় বিচারের জন্য নিম্ন আদালতে পাঠান। আর এখানে এসেছেন বাদী নিজেই। আদালতও ৫৬১-ক ধারায় অন্তর্নিহিত ক্ষমতা প্রয়োগ করে সরাসরি আসামিকে কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ ধরনের ঘটনা এটাই প্রথম বলে জানান তিনি।