বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে মাদারীপুরের শিবচরে চলছে খুশির আমেজ। ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে চারপাশ। বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় প্রস্তুত করা হচ্ছে সভা মঞ্চ। আর জনসভার মঞ্চটি তৈরি হচ্ছে পদ্মা সেতুর আদলেই। ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যাপক তৎপর রয়েছে। আর সমাবেশ সফল করতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। ১০ লাখ মানুষের সমাগমকে লক্ষ্য রেখে ব্যাপক নিরাপত্তার কথা জানান র্যাবের মহাপরিচালক।
বাংলাবাজার ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, মাহেন্দ্রক্ষণের আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। স্বপ্ন বাস্তবায়নের পক্ষে বাংলাদেশের সক্ষমতা। তাই তো শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে ব্যাপক হারে। মাদারীপুরের বাংলাবাজার এলাকায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জনসভায় বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ লক্ষ্যে পদ্মা সেতুর আদলেই তৈরি করা হচ্ছে জনসভার মঞ্চ। ১১টি পিলারের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে সেতুর মূল কাঠামো। তার ওপরে সভামঞ্চ। মঞ্চ থেকে প্রায় ২০ ফুট দূরে নৌকা দিয়ে একটি নদীর আদল তৈরি করা হয়েছে। মঞ্চের চারপাশ ঘিরে রয়েছেন পোষাকধারী ও সাদা পোশাকের প্রশাসনের লোকজন। অদূর থেকেই মঞ্চ দেখতে হবে সবাইকে। তবে পুরো মাঠে বসানো হয়েছে মনিটর। একাধিক স্থানে দাঁড়িয়ে মনিটরে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনবে সাধারণ মানুষ।
পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা থেকে কাওড়াকান্দি পুরোনো ফেরিঘাট এলাকার চারপাশের আট কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সাত শতাধিক মাইক বসানো হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে আধুনিক শব্দযন্ত্র। সেতু চালুতে ঘাট এলাকায় কোনো ভোগান্তি থাকবে না, এতে আনন্দিত দক্ষিণাঞ্চলবাসী। পয়োনিষ্কাশনের জন্য অস্থায়ী ৫০০ টয়লেট বসানো হয়েছে। দূরদূরান্ত থেকে লঞ্চযোগে মানুষ আসার জন্য ১৭টি অস্থায়ী পন্টুন বসানোও হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশকে আরও সুন্দর করার জন্য এখানে বিভিন্ন ধরনের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন লাইটিং করা হয়েছে। পাশাপাশি হোস্ট হিসেবে অতিথিদের সার্বিক কল্যাণে কাজ করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মাদারীপুর-৩ আসনের সাবেক সাংসদ আ. ফ. ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘২৫ জুন মাদারীপুরের আবালবৃদ্ধবনিতা ঘরে বসে থাকতে পারবে না। তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে মাহেন্দ্রক্ষণে সবাই উপস্থিত হবেন। যারা পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছে, তারা না-ও আসতে পারে। তবে আমার বিশ্বাস, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ লাখের ওপরে মানুষ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনতে আসবে। এদিন পুরো দেশই উৎসবে মেতে উঠবে।’
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান ঘিরে নাশকতা পরিকল্পনার তথ্য নেই দাবি করে ব্যাপক প্রস্তুতির কথা জানালেন র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি সভাস্থল পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের জানান, সাইবার মনিটরিংসহ অন্য তথ্য বিশ্লেষণ করে স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের হামলা ও নাশকতার সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবু গোয়েন্দা ও সাইবার মনিটরিং বৃদ্ধির মাধ্যমে জঙ্গিদের যেকোনো পরিকল্পনা নস্যাৎ করা হবে। সেতুর দুই প্রান্তে নিরাপত্তা নিশ্চয়তার দায়িত্বে ব্যাটালিয়ন নিজ নিজ কন্ট্রোলরুমের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করবে র্যাব। র্যাব সদর দপ্তরের দুটি কন্ট্রোলরুম খোলা আছে। এরা সব সময় দায়িত্ব পালন করবে।’
স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, পদ্মা সেতুর মূল মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে পদ্মা সেতুর আদলে। আর সেতু উদ্বোধনের দিন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জনসভাস্থলে হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে অংশ নেবেন দেশের খ্যাতিমান শিল্পীরা। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠান হবে। এতে পুরো আনন্দ ছড়িয়ে পড়বে সারা দেশে।
পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন: