শরীয়তপুর সদর উপজেলায় ধর্ষণচেষ্টার মামলায় এক যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল ইমরান তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের চর সোনামুখী এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম আব্দুল মান্নান খাঁন (৪২)। তিনি রুদ্রকর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, ওই নারীর বাড়ি মাদারীপুরে। তাঁর ৯ বছরের এক ছেলে রয়েছে। তাঁর স্বামী ওমান থাকেন। সেখানে যাওয়ার জন্য শরীয়তপুর সদর উপজেলায় একটি সরকারি ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হন তিনি।
গত ২৫ জুন রাত ৯টার দিকে তিনি বাসা থেকে বের হয়ে ট্রেনিং সেন্টারে যাওয়ার সময় যুবলীগ নেতা মান্নান খান ও তাঁর সহযোগীরা অটোরিকশার গতিরোধ করেন এবং ওই নারীকে গাড়ি থেকে জোর করে নামিয়ে মুখ বেঁধে পরিত্যক্ত একটি ঘরের মধ্যে নিয়ে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
এ সময় ওই নারী চিৎকার দিলে মান্নান ও তাঁর সহযোগীরা মোবাইল ফোনে ওই অবস্থায় নারীর ভিডিও ধারণ করেন এবং তাঁর পরনে থাকা তিন লাখ টাকার স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেন। পরে ডাকচিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে ওই নারী এক বাড়িতে আশ্রয় নেন এবং পরদিন নিজ বাড়ি চলে যান।
এর মধ্যে ওই যুবলীগ নেতা মান্নান খান ওই নারীকে ফোনে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে বলেন এবং চাঁদা না দিলে অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান।
এ বিষয়ে মামলা করার জন্য ওই নারী গত ২৭ জুন পালং মডেল থানায় গেলে থানা থেকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। গত ৩০ জুন ভুক্তভোগী ওই নারী যুবলীগ নেতা আ. মান্নান খান, তাঁর সহযোগী ইদ্রিস গাজী (৩৮) ও কালাচান খাঁসহ (৪০) অজ্ঞাতনামা আরও ৪–৫ জনের বিরুদ্ধে শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।
আদালত মামলাটি আমলে নেয়। পরে আদালতের নির্দেশে গত ৫ জুলাই মামলাটি পালং মডেল থানায় রেকর্ড করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের চর সোনামুখী এলাকায় অভিযান চালিয়ে মান্নানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আজ বুধবার মান্নানকে শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠায় পুলিশ। এ সময় আদালতে মান্নানের আইনজীবী মান্নানের জামিন আবেদন করেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল ইমরান জমিন নামঞ্জুর করে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে আব্দুল মান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ তাঁকে আদালতে পাঠানো হলে আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বাকি আসামিদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।