‘গাঙ্গে ঘর ভাঙে গেল। আপনারা দেহেন না। আমি অসুস্থ, কনতে কনে যাব, সরার জাগা (জায়গা) নাই, জাগা-জমি নাই আমাগোর’—এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন সদর উপজেলার ৮০ বছর বয়সী মহিরন বেগম। উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের সিলিমপুর গ্রামের পদ্মা পাড়ের বাসিন্দা তিনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, পদ্মার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে পদ্মা নদী তীর সংরক্ষণকাজের ৫০ মিটার এলাকার সিসি ব্লক। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে চরসিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ নদী পাড়ের ৩৫টি বসত বাড়ি। এরই মধ্যে বিদ্যালয়টির ভবনে পাঠদান বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
এলাকাবাসী জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে চরসিলিমপুর এলাকায় হঠাৎ ভাঙন শুরু হয়। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নদী ভাঙন শুরু হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আরও ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
স্থানীয় খোদেজা বেগম বলেন, ঘুম ভেঙে তিনি দেখেন নদীতে বুদ্বুদ উঠছে। নদীর পাড়ের বাঁকগুলো ভেঙে চলে যাচ্ছে। তখনই তাঁর স্বামী পাউবোকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাউবোর লোকেরা এসে কিছু বালুর বস্তা ফেলে। এখন বসতঘর নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।
ভাঙনে বিলীন হওয়ার শঙ্কায় থাকা চরসিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধর কথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকলেও এখন এর অস্তিত্বই সবচেয়ে বড় শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মো. ইমান আল ফকির বলেন, স্কুল থেকে ১০ গজ দূরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে ভবনের শিক্ষার্থীদের পাঠদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি, কখন যেন স্কুলটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়।’
পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. রনি বলেন, খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড তাৎক্ষণিকভাবে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করে। এখন ওই এলাকার ভাঙন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।