কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়ে দফায় দফায় প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলে। এ সময় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পৌর সদরের সৈয়দগাঁও এবং পৌর বাজারের টিএনটি সড়ক ও মলংশাহ মাজার এলাকা।
সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। বেশ কয়েকজন বিএনপি কর্মী-সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, জ্বালানি তেল, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, লোডশেডিং ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং ভোলায় পুলিশের গুলিতে দুই কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে আজ শনিবার সকালে পৌর সদর বাজারের পাটমহালে বিক্ষোভ-সমাবেশ করার কথা ছিল স্থানীয় বিএনপির। কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিনের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী পৌর সদর বাজারে আসতে চাইলে সৈয়দগাঁও চৌরাস্তা এলাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিএনপির কর্মী-সমর্থকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়লে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কামাল উদ্দিন ও আতিকুর রহমান মাসুদের নেতৃত্বে বিএনপির কর্মীরা পৌর সদর বাজারের একই কর্মসূচিতে আসার পথে পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাধার মুখে পড়ে। একপর্যায়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। দফায় দফায় প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলে এ সংঘর্ষ। এ সময় কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশ আমাদের বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের বেধড়ক লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেটে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।’
পাকুন্দিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম রেনু বলেন, ‘সমাবেশের নামে বিএনপি নেতা-কর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পৌর সদর বাজারে নাশকতা করার চেষ্টা করে। এ সময় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে তাঁদের প্রতিহত করা হয়।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আল আমিন হোসাইন সাংবাদিকদের জানান, বিএনপির বিক্ষোভ-সমাবেশের কোনো অনুমতি ছিল না। মিছিল নিয়ে আসার পথে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ে। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।